যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের বাণিজ্যযুদ্ধ আরও ঘনীভূত হওয়ার প্রেক্ষাপটে এবার চীন বিরল খনিজ ও চুম্বক রপ্তানি বন্ধ করেছে। এর ফলে বৈশ্বিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সরবরাহে হুমকির মুখে পড়েছে গাড়ি নির্মাতা, অ্যারোস্পেস শিল্প, সেমিকন্ডাক্টর প্রতিষ্ঠান এবং সামরিক সরঞ্জাম প্রস্তুতকারকরা।
নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে চীনা কর্তৃপক্ষ বাণিজ্যসংক্রান্ত নানা সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা করেছে এবং কোন কোন পণ্য রপ্তানি সীমিত করা হবে, তা নির্ধারণে একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করেছে। সেই খসড়ায় বিরল খনিজ ও চুম্বকের কথাও উল্লেখ রয়েছে। নতুন এই নীতিমালা কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু কোম্পানি এবং সামরিক কনট্রাক্টরদের জন্য চীনা উৎস থেকে এই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে।
এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় সংকট তৈরি করতে পারে। কারণ, চুম্বক—যা ড্রোন, রোবট, বৈদ্যুতিক গাড়ি এমনকি ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়—এর সরবরাহ ব্যাহত হলে উৎপাদন শিল্পে প্রভাব পড়বে। ইতোমধ্যে চীন দেশটির বিভিন্ন বন্দরে চুম্বকের চালান পাঠানো বন্ধ রেখেছে।
পাশাপাশি চীন বিরল খনিজ রপ্তানিও সীমিত করেছে, যা প্রতিরক্ষা ও পরিবহন শিল্পে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে বিরল খনিজ ও চুম্বক আমদানি করে, যার বড় অংশই আসে চীন থেকে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন যদি এই রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা দুই মাস বজায় রাখে, তাহলে মার্কিন কোম্পানিগুলোর স্টকপাইল বা গুদাম মজুদ ফুরিয়ে যেতে পারে। উল্লেখযোগ্যভাবে, চীন সরকার ৪ এপ্রিল থেকে ছয়টি বিরল ভারী ক্ষারমৃত্তিকা এবং কিছু চুম্বকের রপ্তানিতে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এই পদার্থগুলোর প্রায় সবই চীনে উৎপাদিত এবং পরিশোধিত হয়, যা অন্য কোথাও সহজলভ্য নয়।
এই সিদ্ধান্তকে অনেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চীনা পণ্যে শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়া হিসেবেই দেখছেন।