পরশুরামের সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের সময় ৭ জন বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিলোনিয়া থানার পুলিশ। শনিবার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বিলোনিয়ার তবলা চৌমুহনী এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। জানা গেছে, ইউরোপের বুলগেরিয়া ভিসা প্রাপ্তির উদ্দেশ্যে তারা এই পথ বেছে নিয়েছিলেন।
সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা বাংলাদেশের ফেনী জেলার পরশুরাম পৌর এলাকার বাসপদুয়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। তাদের গন্তব্য ছিল ভারতের রাজধানী দিল্লি। ভিসা বা বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই তারা ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করায়, ত্রিপুরা রাজ্যের দক্ষিণ অংশের আমজাদনগর হয়ে তারা দিল্লির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। এই যাত্রাপথেই তবলা চৌমুহনী এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরির সময় ভারতের বিলোনিয়া থানার পুলিশ তাদের আটক করে।
আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাতে চায় এবং এজন্যই দালালদের মাধ্যমে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করে। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ভারতের বিদেশি নাগরিক আইনে মামলা করা হয়েছে এবং বর্তমানে তারা বিলোনিয়া থানার হাজতে আটক রয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃতদের পরিচয় অনুযায়ী, তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা। তাদের মধ্যে রয়েছেন:
1. রবিন হোসাইন (২৮), পিতা সুনাম উদ্দিন, কালিয়াকৈর, গাজীপুর
2. মো. রাফি (২৫), পিতা আবু জাফর, রঘুনাথ গ্রাম, পত্নীতলা, নওগাঁ
3. এমদাদ হোসাইন (২৭), পিতা দেলোয়ার হোসেন, নিজকালিকাপুর, পরশুরাম, ফেনী
4. সাইদুর জামান (২৮), পিতা আহমেদ, উত্তর গুথুমা, পরশুরাম, ফেনী
5. ফয়সাল (২৪), পিতা আবদুর রহমান, চরসুবুদ্ধি, রায়পুর, নরসিংদী
6. রায়হান মোল্লা (২১), পিতা ফারুক মোল্লা, গাজরা, মতলব উত্তর, চাঁদপুর
7. গিয়াস উদ্দিন (৩৫), পিতা ফয়েজ আহমেদ, ছাগলনাইয়া, ফেনী
বাংলাদেশের পরশুরাম মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুরুল হাকিম জানান, “আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।”
এ ধরনের ঘটনা শুধু সীমান্ত নিরাপত্তাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে না, বরং মানবপাচার ও অবৈধ অভিবাসনের বড় ধরনের সমস্যা হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে। প্রতিনিয়তই দেখা যাচ্ছে, দালালদের প্ররোচনায় পড়ে অনেক বাংলাদেশি নাগরিক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এই ধরনের ঘটনা রোধে সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানো এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি। তাছাড়া, দালাল চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি যারা প্রতারিত হচ্ছেন তাদের আইনি সহায়তা প্রদান করাও প্রয়োজন।
এখন দেখার বিষয়, আটক বাংলাদেশি নাগরিকদের বিষয়ে ভারতীয় আইন কী সিদ্ধান্ত নেয় এবং তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া কীভাবে সম্পন্ন হয়।