ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল থালায় ধানীখোলা ইউনিয়নের উজান দাসপাড়া গ্রামের চৌরাস্তা বাজার, এপ্রিল ১১, ২০২৫ — রোজঃ শুক্রবার
দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর ধারাবাহিক নির্মমতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে এক বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে চৌরাস্তা বাজার নবজাগ্রত যুব সংঘ। এই বিক্ষোভের উদ্দেশ্য, বিশ্বের নির্যাতিত ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ এবং মুসলিম উম্মাহকে একত্রিত করে একটি জোরালো বার্তা পৌঁছে দেওয়া — যে জুলুমের বিরুদ্ধে মুসলমানরা নীরব নয়।
চৌরাস্তা বাজার নবজাগ্রত যুব সংঘের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী শুক্রবার বিকাল ৩টায় চৌরাস্তা বাজারে এই প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এতে সর্বস্তরের তৌহিদী জনতাকে অংশগ্রহণের জন্য আন্তরিক আহ্বান জানানো হয়েছে।
গত কয়েক সপ্তাহে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় গাজা উপত্যকায় শিশু, নারী ও বয়োজ্যেষ্ঠসহ হাজার হাজার নিরীহ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। বিধ্বস্ত হয়েছে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মানবিক সহায়তা কেন্দ্রগুলো। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা ও নিষ্ক্রিয়তায় এই বর্বরতা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
এই সংকটকে শুধু একটি ধর্মীয় ইস্যু হিসেবে নয়, বরং মানবাধিকারের সবচেয়ে বড় লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে বিশ্ববাসী। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে খ্রিস্টান, ইহুদি ও নাস্তিক সহ সব ধর্ম ও মতের মানুষ ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে রাস্তায় নেমেছে। বাংলাদেশেও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়াতে শুরু করেছে।
নবজাগ্রত যুব সংঘের নেতৃবৃন্দ মনে করেন, এই বর্বরতা ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা প্রত্যেক বিবেকবান মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব। সেই লক্ষ্যে তারা স্থানীয়ভাবে প্রতিবাদ আন্দোলনকে জোরদার করার অংশ হিসেবে এই সমাবেশের আয়োজন করেছেন।
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে —
“আমরা চাই না আমাদের নিরবতা নির্যাতকের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার ইঙ্গিত বহন করুক। এখনই সময় জেগে ওঠার, সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানোর।”
এই প্রতিবাদ সমাবেশে স্থানীয় মসজিদের ইমামগণ, আলেম সমাজ, ছাত্র সংগঠন, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক সমাজ, এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। ফিলিস্তিনের ইতিহাস, বর্তমান সংকট ও করণীয় নিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য উপস্থাপন করবেন বক্তারা।
নবজাগ্রত যুব সংঘ থেকে সম্মানিত জনসাধারণের প্রতি কিছু অনুরোধ জানানো হয়েছে:
শান্তিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণ: বিক্ষোভ হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও শৃঙ্খলাপূর্ণ। কোনো ধরনের উসকানি বা বিশৃঙ্খল আচরণ পরিহার করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ফিলিস্তিনের পতাকা ও প্ল্যাকার্ড: যারা অংশ নিচ্ছেন, তারা ফিলিস্তিনের পতাকা, সংহতির বার্তাসহ প্ল্যাকার্ড নিয়ে অংশগ্রহণের জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে প্রচার: ফেসবুক, টুইটার (এক্স), টিকটক, ইউটিউবসহ সামাজিক মাধ্যমে বিক্ষোভের বার্তা ছড়িয়ে দিতে অনুরোধ করা হয়েছে, যাতে দেশব্যাপী প্রভাব পড়ে।
দোয়া মাহফিল: সমাবেশ শেষে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত ও ফিলিস্তিনের মুক্তির জন্য বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন থাকবে।
“ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ” কেবল একটি স্লোগান নয়, এটি আজ বিশ্বের নির্যাতিত মানুষের প্রতি ভালোবাসার প্রতীক হয়ে উঠেছে। চৌরাস্তা বাজারের এই সমাবেশ হবে একটি শক্তিশালী বার্তা — যে আমরা ন্যায়ের পক্ষে, মানবতার পক্ষে, নিপীড়িতের পক্ষে।
চৌরাস্তা বাজার নবজাগ্রত যুব সংঘ এই সমাবেশের মাধ্যমে একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে চায় — আমরা নির্যাতিত ফিলিস্তিনের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকবো। বিশ্ব শান্তি ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে আমাদের এই আওয়াজ একদিন অবশ্যই ফলপ্রসূ হবে ইনশাআল্লাহ।
লিখেছেন: মোঃ সাদিউল হক