জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার বাংলাদেশেই সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তার মতে, এসব মামলা আন্তর্জাতিক ফোরামে না পাঠিয়ে নিজস্ব ট্রাইব্যুনালেই নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত সরকারিভাবে নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা চাই না মামলাগুলো আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) পাঠানো হোক। বরং আইসিসি যদি টেকনিক্যাল সহায়তা দেয়, সেটি আমরা গ্রহণ করতে প্রস্তুত। যেমনটি জাতিসংঘ থেকে আমরা প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা পেয়েছি।”
তাজুল ইসলাম আরও বলেন, “বাংলাদেশ এ ধরনের মামলার বিচার সম্পাদনে সক্ষম। কারণ সাক্ষ্যপ্রমাণ, ভুক্তভোগী ও ঘটনার পটভূমি সবই দেশের অভ্যন্তরে রয়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর প্রয়োজন নেই।”
এদিকে চট্টগ্রামে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় সাবেক এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে একদিন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। আগামী ১৬ এপ্রিল তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানা গেছে। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেয়। অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
একই মামলায় যুবলীগ কর্মী মো. ফিরোজকেও ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় এবং তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তাজুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রামে জুলাই আন্দোলনের সময় অন্তত ৯ জন নিহত এবং ৪৫৯ জন আহত হওয়ার তথ্য রয়েছে। মামলায় নতুন কিছু তথ্য যোগ হওয়ায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে অতিরিক্ত তিন মাস সময় চেয়ে আবেদন করা হয়, যা আদালত মঞ্জুর করেছে। নতুন শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ জুলাই।
এ ছাড়া সাভারের আশুলিয়ায় সংঘটিত একটি ঘটনায়, যেখানে ছাত্র আন্দোলনের সময় লাশ পোড়ানোর অভিযোগ রয়েছে, সে মামলায় তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। তারা হলেন- সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহিদুল ইসলাম, বরখাস্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফী এবং ডিবির সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন। তাদের আগামী ১৫ এপ্রিল হাজির হতে বলা হয়েছে।