থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অনুষ্ঠিতব্য বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক আয়োজনের যে প্রস্তাব ঢাকা দিয়েছিল, তা নিয়ে নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া সফরসূচি অনুযায়ী, মোদি কেবলমাত্র থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শুক্রবার (২৮ মার্চ) প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ৩ এপ্রিল থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার সঙ্গে মোদি বৈঠকে মিলিত হবেন। সফরের সময় এটিই তার একমাত্র দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে।
বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের সাত দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থা বিমসটেকের ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলন ৪ এপ্রিল শুরু হবে, যেখানে যোগ দিতে থাইল্যান্ডে যাচ্ছেন মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি। সম্মেলনের ফাঁকে ইউনূসের সঙ্গে মোদির বৈঠক নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার ভারতকে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করেছিল।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জানিয়েছে, এ বিষয়ে ভারতের উত্তর পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে তারা। পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন ২৫ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ভারতের সঙ্গে বর্তমান সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে এ বৈঠকটি গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি হলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের স্থবিরতা কাটতে পারে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে চলে যান। তিন দিন পর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। এরপর থেকে দুই দফায় ইউনূস ও মোদির সাক্ষাতের সম্ভাবনা তৈরি হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।
৩ এপ্রিল ঢাকা থেকে ব্যাংকক পৌঁছে ৪ এপ্রিল বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন অধ্যাপক ইউনূস। একই দিন মোদি থাইল্যান্ড সফরে এসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী সিনাওয়াত্রার সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং ৪ এপ্রিল সরকারি সফরে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর উদ্দেশে ব্যাংকক ত্যাগ করবেন।
এ সফরে ইউনূস ও মোদির সৌজন্য সাক্ষাৎ হবে কি না, সে বিষয়ে কোনো সরকারি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি। এর আগে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে তাদের বৈঠকের সম্ভাবনা থাকলেও তা হয়নি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর মতে, ইউনূসের একটি সাক্ষাৎকারের কিছু মন্তব্য নয়াদিল্লি ভালোভাবে নেয়নি, যা ওই বৈঠক না হওয়ার কারণ হতে পারে।
এছাড়া, গত অক্টোবরে সামোয়ার কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনেও তাদের সাক্ষাৎ হতে পারত, কিন্তু দুই নেতাই ওই সম্মেলনে অনুপস্থিত ছিলেন।