গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে নতুন করে হামলা চালানোর পর এই মর্মান্তিক সংখ্যা প্রকাশ পেল।
রবিবার (২৩ মার্চ) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪১ জন নিহত হয়েছে, ফলে মোট প্রাণহানি দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ২১ জনে। গাজার কর্তৃপক্ষ হতাহতের সংখ্যা প্রকাশের সময় বেসামরিক নাগরিক ও হামাস যোদ্ধাদের মধ্যে পার্থক্য করে না। তবে জাতিসংঘের মতে, নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
অনেকে আশঙ্কা করছেন, প্রকৃত মৃতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ ধ্বংসস্তূপের নিচে বহু মানুষ আটকা পড়ে আছে।
গত মঙ্গলবার ইসরায়েল নতুন করে হামলার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তির ‘গুরুতর লঙ্ঘন’ বলে দাবি করেছে। হামাস জানায়, তারা জানুয়ারিতে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চলতে চায়, কিন্তু ইসরায়েল তা ভেঙে ফেলায় বৃহস্পতিবার তারা তেল আবিবে পাল্টা রকেট হামলা চালায়।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার মানুষ হত্যাকাণ্ড কমার কোনো আশা দেখছে না। ইসরায়েলি নেতৃত্ব হুমকি দিচ্ছে যে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। এক টেলিভিশন ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, “আমি আপনাদের বলতে চাই, এটি কেবল শুরু।”
গাজার বিশাল জনগোষ্ঠী ইতোমধ্যে ঘরবাড়ি ছেড়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাও ধ্বংসের মুখে। ইসরায়েলি হামলায় হাসপাতালগুলো কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
এই মাসের শুরুতে ইসরায়েল গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়, যার ফলে অঞ্চলটিতে মানবিক সংকট চরমে পৌঁছেছে এবং দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে।
১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকেই চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আলোচনা থমকে আছে। হামাস বলছে, ইসরায়েল যদি স্বাক্ষরিত চুক্তির শর্ত মেনে চলত, তাহলে ১ মার্চ থেকেই যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করা যেত।
এই পর্যায়ে ইসরায়েলের গাজা থেকে পুরোপুরি সরে যাওয়ার কথা ছিল এবং যুদ্ধ স্থায়ীভাবে শেষ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কথা ছিল। এর বদলে হামাস সব জীবিত বন্দিকে মুক্তি দিত। কিন্তু ইসরায়েল সেই শর্ত উপেক্ষা করে আবারও হামলা শুরু করেছে।