বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও চ্যাম্পিয়নশিপ মাতানো মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরীর অন্তর্ভুক্তি নিয়ে উন্মাদনা তুঙ্গে। আগামী ২৫ মার্চ ভারতের বিপক্ষে শিলংয়ে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচের জন্য এখন পুরো দল সেখানেই অবস্থান করছে। হামজার অভিষেক ঘিরে ফুটবলপ্রেমীদের মাঝে যে নতুন জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে, সেটি জয়ের মাধ্যমে পূর্ণতা দিতে চান তপু বর্মণ, সোহেল রানা এবং তার সতীর্থরা।
হামজার সঙ্গে অনুশীলন: ইতিবাচক অভিজ্ঞতা
গত বুধবার জাতীয় দলের সঙ্গে প্রথমবারের মতো অনুশীলনে অংশ নেন হামজা চৌধুরী। তার সঙ্গে অনুশীলনের অভিজ্ঞতা নিয়ে ডিফেন্ডার তপু বর্মণ বলেন,
> “এটা আমাদের এবং হামজার জন্যই অনেক রোমাঞ্চকর ছিল। সে আমাদের দেশে এসে অনেক ব্যস্ত ছিল, তবে গতকাল সে আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের সঙ্গে অনুশীলন করেছে। সে ফিট আছে, আমরাও ফিট আছি। এটা একটা ইতিবাচক দিক।”
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে তপু আরও বলেন,
> “যখন এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের সূচি তৈরি হয়, তখনই আমরা জানতে পারি ভারতের বিপক্ষে আমাদের ম্যাচ রয়েছে। সেই অনুযায়ী আমরা অনেক আগেই প্রস্তুতি শুরু করি। আমাদের মানসিকতা ও চিন্তাধারা জয়ের ওপরই কেন্দ্রীভূত। আমরা সেভাবেই এগিয়ে যাচ্ছি। আপনাদের দোয়া আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।”
সোহেল রানার প্রত্যাশা: নতুন শুরুর লক্ষ্য
জাতীয় দলের মিডফিল্ডার সোহেল রানা মনে করেন, বাংলাদেশের বর্তমান দল ভারতের বিপক্ষে ভালো ফল করতে সক্ষম। তিনি বলেন,
> “আমাদের সৌদি আরবে খুব ভালো অনুশীলন ক্যাম্প হয়েছে। হামজার দলে যোগ দেওয়ায় আমাদের দল আরও শক্তিশালী হয়েছে। ওর সঙ্গে আমরা দ্রুত মানিয়ে নিয়েছি, যা আমাদের জন্য ইতিবাচক দিক। মনে হচ্ছে, ও অনেক দিন ধরেই আমাদের সঙ্গে খেলছে।”
তিনি আরও যোগ করেন,
> “আমরা চাই ভারতের বিপক্ষে নতুনভাবে শুরু করতে এবং জয় দিয়ে যাত্রা শুরু করতে। হামজার মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়কে সঙ্গে নিয়ে আমরা বাংলাদেশ ফুটবলকে আরও উঁচু পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই।”
দলের পরিবেশ ও হামজার ব্যক্তিত্ব
দলের ড্রেসিং রুমের পরিবেশ প্রসঙ্গে সোহেল রানা বলেন,
> “ড্রেসিং রুমের পরিবেশ খুব ভালো। হামজা খুব সহজেই আমাদের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে, যা আমাদের দলের জন্য ইতিবাচক। সে বড় মনের অধিকারী এবং কোনো অহংকার নেই। ও এত বড় লেভেলে খেলেও আমাদের সঙ্গে পুরোপুরি মিশে গেছে।”
হামজাকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখছেন সোহেল,
> “হামজার আগমনে দেশের ফুটবলে নতুন করে উন্মাদনা সৃষ্টি হয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ওকে দেখে উৎসাহ পাবে। এটি বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য বড় পাওয়া।”
টিম ম্যানেজমেন্টের আশাবাদ
জাতীয় দলের ম্যানেজার আমের খান জানান, পুরো দল এখন সম্পূর্ণ ফিট এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রস্তুতি চলছে। তিনি বলেন,
> “হামজার অন্তর্ভুক্তির পর দলের পরিবেশ বদলে গেছে। এটি আমাদের খেলোয়াড়দের বাড়তি উদ্দীপনা জোগাচ্ছে। ইনশাআল্লাহ, আমরা ভালো ফল করব।”
তিনি আরও যোগ করেন,
> “হামজা প্রিমিয়ার লিগের খেলোয়াড় হয়েও দলে কোনো বাড়তি দাবি রাখেনি। সে দলের সঙ্গে পুরোপুরি মানিয়ে নিয়েছে, যা আমাদের জন্য আনন্দের বিষয়।”
ভারতের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে পুরো বাংলাদেশ দল আত্মবিশ্বাসী। নতুন সেনসেশন হামজা চৌধুরীর অন্তর্ভুক্তি বাংলাদেশের ফুটবলে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। এখন সবার লক্ষ্য—ভারতের বিপক্ষে জয় ছিনিয়ে এনে এই নতুন অধ্যায়কে সাফল্যের গল্পে রূপ দেওয়া।