ফরহাদ মজহার: “খালেদা জিয়া আপসহীন না থাকলে গণঅভ্যুত্থান সফল হতো না”
শনিবার (১৫ মার্চ) যশোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত “বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশের তরুণদের করণীয়” শীর্ষক আলোচনা সভায় কবি ও চিন্তাবিদ ফরহাদ মজহার বলেন, “খালেদা জিয়া যদি আপসহীন মনোভাব ধরে না রাখতেন, তাহলে গণঅভ্যুত্থান সফল হতো না। তিনি অনেক নিপীড়ন সহ্য করেছেন। একইভাবে, গণঅভ্যুত্থান না হলে তার মুক্তিও হতো না এবং তারেক জিয়ার ফাঁসির মামলাও প্রত্যাহার করা সম্ভব হতো না। ফলে বিএনপির উচিত ছাত্রদের পাশে থেকে তাদের দিকনির্দেশনা দেওয়া।”
সভায় ফরহাদ মজহার আরও বলেন, “১৯৭২ সালের সংবিধান আসলে পাকিস্তানের সংবিধানেরই একটি রূপান্তর। একাত্তরে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করলেও প্রকৃত অর্থে বিপ্লব ঘটেনি। স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবুর রহমান জনগণের মতামত বাস্তবায়ন করেননি, এমনকি গণপরিষদের ভোটও হয়নি। ফলে প্রকৃত রাষ্ট্রগঠন সম্ভব হয়নি। অথচ গণপরিষদ ভোট ছাড়া রাষ্ট্র গঠন হয় না।” তিনি দাবি করেন, “৭২-এর সংবিধান কখনোই জনগণের সংবিধান ছিল না, বরং এটি পাকিস্তানেরই একটি সংস্করণ, কারণ যাঁরা এটি প্রণয়ন করেছেন, তাঁরা পাকিস্তানের সংবিধান প্রণয়নের জন্যই নির্বাচিত হয়েছিলেন।”
তরুণদের উদ্দেশে ফরহাদ মজহার বলেন, “সংস্কারের মাধ্যমে সমাধান আসবে না। সংবিধান আমরা নিজেরা তৈরি করিনি, তাই রাষ্ট্রগঠনে গণপরিষদ ভোটের দাবি ন্যায্য। যদি আমরা এটিকে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ বলি, তাহলে এই পর্বে রাষ্ট্রগঠন করতে ব্যর্থ হলে আরও ৫০ বছর পিছিয়ে পড়তে হবে। কিন্তু ছাত্ররা এই বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে পারছে না।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর শাখার আহ্বায়ক রাশেদ খান। আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন প্রাচ্যসংঘ যশোরের প্রতিষ্ঠাতা লেখক ও গবেষক বেনজীন খান, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য খালেদ সাইফুল্লাহ, মোহাম্মদ রোমেল, যশোরের ছাত্রনেতা ফাহিম আল ফাত্তাহ, মারুফ কবীর ও যশোর নাগরিক কমিটির নেতা আশালতা প্রমুখ।