বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ‘জামায়াত যুদ্ধাপরাধের সহযোগী ছিল’—এমন ভিত্তিহীন মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, গত ১২ মার্চ মাহফুজ আলম তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি বলেন, মাহফুজ আলমের বক্তব্যে স্পষ্টতই একটি প্রতিবেশী দেশের এজেন্ডা বাস্তবায়নের প্রতিফলন দেখা যায়।
তিনি আরও বলেন, মাহফুজ আলমকে মনে রাখতে হবে যে, তিনি একটি অরাজনৈতিক অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা। সে হিসেবে তার কোনো রাজনৈতিক দলকে টার্গেট করে সমালোচনা বা মিথ্যা তথ্য দেওয়ার নৈতিক ও বিধিগত অধিকার নেই। তার এই বক্তব্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিরপেক্ষতা ও অরাজনৈতিক চরিত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
গোলাম পরওয়ার বলেন, ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময়ে যে তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছিল, তাতে জামায়াতের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সে কারণেই বঙ্গবন্ধু নিজেই সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে আটককৃতদের মুক্তি দিয়েছিলেন এবং পাকিস্তানি সেনাদের ফেরত পাঠিয়ে বিষয়টির সমাধান করেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, জামায়াতের নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে বিচারের নামে প্রহসন চালানো হয়েছে। শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ সৃষ্টি করে বিচারকদের ভয় দেখিয়ে সাজানো সাক্ষীর মাধ্যমে যে রায় দেওয়া হয়েছিল, তা দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। স্কাইপ কেলেঙ্কারি, সাবেক বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বক্তব্য এবং সাক্ষী সুখরঞ্জন বালীর স্বীকারোক্তি এসব বিচারের অসারতা প্রমাণ করে। এমনকি ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্টও এই বিচারের গ্রহণযোগ্যতা স্বীকার করেনি।
তিনি বলেন, এসবই প্রমাণ করে যে ১৯৭১ সালে জামায়াত নেতাদের যুদ্ধাপরাধের সহযোগী হওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মাহফুজ আলমের মন্তব্য ভিত্তিহীন ও অনুমাননির্ভর, যা রাজনৈতিক অসৎ উদ্দেশ্যপ্রসূত বা কোনো বিশেষ অপশক্তির ইন্ধনে দেওয়া হতে পারে।
গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারী। জামায়াতের আকিদা নিয়ে প্রশ্ন তোলা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও এখতিয়ারবহির্ভূত। মাহফুজ আলম না জেনে-বুঝে বিভ্রান্তিমূলক মন্তব্য করেছেন।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, তার এই বক্তব্যের পর মাহফুজ আলমের বিভ্রান্তি দূর হবে এবং তিনি তার মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করবেন। পাশাপাশি, ভবিষ্যতে জামায়াত সম্পর্কে এমন অসত্য মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকবেন।