জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান জানিয়েছেন, আগামী ১৬ মার্চের মধ্যে সব পাঠ্যবই বিতরণ করা সম্ভব হবে। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, প্রাথমিক স্তরের ৯৯.৯৩% এবং মাধ্যমিক স্তরের ৯১.৬৭% বই ইতোমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। বর্তমানে এক কোটি বই মুদ্রণের অপেক্ষায় রয়েছে এবং আরও দুই থেকে আড়াই কোটি বই বাঁধাই করা বাকি। তবে ১৬ মার্চের মধ্যে এসব বই সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদী।
রিয়াজুল হাসান আরও বলেন, কিছু জায়গায় প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বই সরবরাহ হয়েছে, আবার কিছু স্থানে কম গেছে। তবে এসব বই পুনর্বিন্যাসের কাজও মার্চের মধ্যেই সম্পন্ন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে এনসিটিবি চেয়ারম্যান আরও জানান, তারা চেয়েছিলেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে সব বই বিতরণ করতে। তবে এবারও ১৬ মার্চের মধ্যে সরবরাহ শেষ হলে, আগের বছরের তুলনায় মাত্র একদিন আগেই এই কাজ শেষ হবে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, আটটি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান সহযোগিতা করছে না, যদিও এসব প্রতিষ্ঠানের কাছে থাকা বইয়ের সংখ্যা খুব বেশি নয়। এছাড়া নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছে, যা তাদের অগ্রগতিকে ব্যাহত করেছে।
চলতি বছরে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের জন্য মোট ৩৯ কোটি ৬০ লাখের বেশি বই মুদ্রণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। ১০ মার্চ পর্যন্ত ৩৮ কোটি ৭০ লাখ ৪ হাজার বই ছাপা হয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিক স্তরের ৯ কোটি ১৯ লাখ বইয়ের মধ্যে ৯ কোটি ১৮ লাখের বেশি বই ছাপানো হয়েছে এবং ৯ কোটি ১৬ লাখের বেশি বই সরবরাহ করা হয়েছে। মাধ্যমিক স্তরে ৩০ কোটি ৪১ লাখ বইয়ের মধ্যে ছাপা হয়েছে ২৯ কোটি ৫১ লাখের বেশি এবং বিতরণ করা হয়েছে ২৭ কোটি ২০ লাখ বই।
এর আগে, প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আজাদ মুজমদার জানান, আমদানি করা কাগজ খালাসে বিলম্ব হওয়ায় কিছু বই সময়মতো ছাপানো সম্ভব হয়নি। এছাড়া চীনের নববর্ষ উদযাপনের কারণেও বই মুদ্রণের প্রক্রিয়ায় কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এবার সম্পূর্ণ বই দেশেই মুদ্রিত হয়েছে, যেখানে কাগজ ও বাঁধাইয়ের মান বজায় রাখার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়েছে। তবে আগের সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান ইচ্ছাকৃতভাবে এই প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করার চেষ্টা করেছে।