নারী ও শিশু নিপীড়ন, ধর্ষণের প্রতিবাদ ও ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
ঢাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
রোববার (তারিখ) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য, অপরাজেয় বাংলা ও অন্যান্য স্থানে বিভিন্ন বিভাগের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে অংশ নেন শিক্ষার্থীরা। বেলা ১১টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক’ ব্যানারে মানববন্ধন করেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা। একই সময়ে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষার্থীরাও ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
এছাড়া, দুপুরের আগ পর্যন্ত লোক প্রশাসন বিভাগ, রসায়ন বিভাগ, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগ, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ভূতত্ত্ব বিভাগ, ইংরেজি বিভাগ, টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগসহ বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ দুপুর আড়াইটায় বিক্ষোভের ঘোষণা দেয়।
বুয়েটে আন্দোলন
শুধু ঢাবিতেই নয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরাও ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। বেলা দেড়টায় বুয়েট শহীদ মিনারে তারা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন। আন্দোলনকারীরা ধর্ষকদের জন্য প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবি জানিয়ে বলেন, “যাতে ভবিষ্যতে কেউ এই জঘন্য অপরাধ করার সাহস না পায়।”
‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ’-এর আত্মপ্রকাশ
এর আগে, শনিবার দিবাগত রাতে ধর্ষণ, নিপীড়ন, নারীবিদ্বেষী মানসিকতা ও বিচারহীনতার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে ‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম আত্মপ্রকাশ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই প্ল্যাটফর্মের ঘোষণা দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাবি মুখপাত্র রাফিয়া রেহনুমা হৃদি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা যৌথভাবে এই মঞ্চের ঘোষণা দেন।
‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ’-এর দুটি দাবি:
১. ধর্ষণবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে সকল ধর্ষণের বিচার দ্রুত নিশ্চিত করা।
2. আছিয়া হত্যাচেষ্টা মামলার আসামিসহ ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি, অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা।
দেশজুড়ে চলমান ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনার প্রেক্ষাপটে এই আন্দোলন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই প্রতিবাদ চলবে।