ভোলার লালমোহনে সংঘবদ্ধ গরু চোর চক্রের ১১ সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। অভিযানের সময় লুণ্ঠিত ১৬টি গরুর মধ্যে ৫টি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এ নিয়ে শনিবার (৮ মার্চ) সকালে লালমোহন থানায় এক প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ভোলার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার বাবুল আখতার ও লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলামসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সহকারী পুলিশ সুপার বাবুল আখতার জানান, গত ২ মার্চ লালমোহন উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীর মাঝের চর কচুয়াখালীতে কৃষক জাকির মাঝির খোয়াড় থেকে ১০-১২ জনের সংঘবদ্ধ চোরের দল হামলা চালিয়ে ১৬টি গরু লুট করে। তারা খোয়াড়ের রাখালদের ভয় দেখিয়ে ও মারধর করে হাত-পা বেঁধে ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনায় পরদিন লালমোহন থানায় মামলা হয়।
তদন্তে পুলিশ চোর চক্রের প্রধান জুয়েল মৃধার (৪০) সন্ধান পায়। পরে ৬ মার্চ রাতে বিশেষ অভিযানে বরিশাল শহরের ৪০ গোডাউন এলাকা থেকে ডিবি পুলিশ তাকে আটক করে। জুয়েল পটুয়াখালী সদর উপজেলার মাদার বুনিয়া ইউনিয়নের বেজাল বুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
জুয়েলকে আটকের পর, সে চক্রের আরও চার সদস্য—মো. নুরু, মাইনুদ্দিন প্যাদা, আবুল হোসেন ও আবু তাহেরকে ফোনে ডেকে এনে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
জিজ্ঞাসাবাদে জুয়েল চক্রের অন্যান্য সদস্যদের নাম প্রকাশ করে এবং লুট হওয়া গরুর অবস্থান জানায়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৭ মার্চ রাতে বাউফল উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের মাঝের চরে অভিযান চালিয়ে শাহাবুদ্দিন মেম্বারের বাড়ি থেকে ৫টি গরু উদ্ধার করা হয়। একই অভিযানে চোর চক্রের আরও ছয় সদস্য—নিজাম, মাজহারুল হাওলাদার, ইসমাত হোসেন, রেজাউল সরদার, জাকির হাওলাদার ও তোফাজ্জল ফরাজিকে আটক করা হয়। এদের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার বাউফল, দশমিনা ও রাঙ্গাবালি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই সংঘবদ্ধ চোর চক্র দিনের বেলায় ইঞ্জিনচালিত ট্রলার নিয়ে তরমুজ চাষির ছদ্মবেশে বিভিন্ন চরে ঘোরাফেরা করত। কখনও তরমুজ ও রবিশস্য কেনার অজুহাতে কৃষকদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলত এবং রাতের বেলায় গরু-মহিষ লুট করত। চরের বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিল।