এবারের স্বাধীনতা পুরস্কার নিয়ে থাকছে বিশেষ চমক। দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় এই সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে প্রকৃত গুণী ব্যক্তিদের, যাদের অবদান দেশের শিল্প, সাহিত্য, সমাজসেবা, শিক্ষা ও বিজ্ঞানের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে অনন্য।
আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, এবার বিতর্কিত কেউ স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, “একুশে পদক নিয়ে আপনারা যেমন খুশি হয়েছেন, তেমনি স্বাধীনতা পুরস্কার নিয়েও খুশি হবেন বলে আশা করি।”
পুরস্কারপ্রাপ্তদের তালিকা
বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে জানা গেছে, এবারের স্বাধীনতা পুরস্কারে জীবিতদের মধ্যে সম্মানিত হচ্ছেন—
ইতিহাসবিদ ও ভাষা আন্দোলনের গবেষক বদরুদ্দীন উমর
এছাড়া, মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন—
কবি আল মাহমুদ
বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. জামাল নজরুল ইসলাম
ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ
ভাস্কর নভেরা আহমেদ (কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অন্যতম নকশাকার)
বুয়েটের শহীদ শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ (বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার কারণে নির্মমভাবে নিহত)
উপদেষ্টা কমিটির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এবার মোট ১০ জনের কম ব্যক্তি এ পুরস্কার পাবেন।
উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক ও সিদ্ধান্ত
গতকাল রোববার, স্বাধীনতা পদক প্রদান সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টারা এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।
বৈঠক শেষে শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “এবার আমরা গতানুগতিক ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছি। তাই স্বাধীনতা পুরস্কারে ব্যতিক্রমী কিছু গুণী ব্যক্তিকে মনোনীত করা হয়েছে। কমিটির সুপারিশ চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো হবে।”
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, “আগের মতো দলীয় বা গোষ্ঠীগত স্বার্থে পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে না। আগে এমনকি র্যাবের মতো বিতর্কিত সংস্থাকেও এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। এবার সেই ধারা থেকে বেরিয়ে আসা হয়েছে।”
স্বাধীনতা পুরস্কার: সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতিবছর ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে এ পুরস্কার দিয়ে আসছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এ পুরস্কারের প্রচলন করেন। এটি দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা হিসেবে বিবেচিত।
পুরস্কারপ্রাপ্তরা যা পাবেন:
৫ লাখ টাকা
১৮ ক্যারেটের ৫০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণের পদক
পদকের একটি রেপ্লিকা
স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২৫ সত্যিকার অর্থেই বিশেষ কিছু হতে চলেছে। বিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠে এবারের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, যা দেশের বুদ্ধিজীবী, সাহিত্যিক ও সমাজসেবীদের ন্যায্য সম্মান প্রদান নিশ্চিত করবে। এটি জাতির জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করবে বলেই আশা করা যায়।