ওভাল অফিসে এক নজিরবিহীন বাকবিতণ্ডায় জড়ালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, একপর্যায়ে জেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউস ত্যাগ করতে বলা হয় এবং নির্ধারিত যৌথ সংবাদ সম্মেলন বাতিল করা হয়। শনিবার (১ মার্চ) বিবিসির এক লাইভ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ভয়েস অফ আমেরিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈঠকের মূল লক্ষ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রকে ইউক্রেনের বিরল খনিজ সম্পদ ব্যবহারের অনুমতি প্রদান। কিন্তু আলোচনার গতি দ্রুতই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যখন ট্রাম্প জেলেনস্কিকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন— “হয় আপনি চুক্তি করবেন, নইলে আমরা বেরিয়ে যাচ্ছি।”
বৈঠকের সময় জেডি ভান্স মন্তব্য করেন যে, জেলেনস্কি ট্রাম্পের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করেছেন। বৈঠকের পর ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইঙ্গিত দেন যে, এই চুক্তি বাস্তবায়িত হচ্ছে না।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলমান। জো বাইডেন প্রশাসন ইউক্রেনকে কয়েক শ কোটি ডলারের অস্ত্র ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করলেও, ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে এই সহায়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ট্রাম্প সবসময় জেলেনস্কিকেই যুদ্ধের জন্য দায়ী করে আসছেন।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, বৈঠকে ট্রাম্প একের পর এক আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিতে থাকেন এবং প্রকাশ্যে জেলেনস্কিকে চ্যালেঞ্জ করেন। তিনি বলেন,
“আপনার দেশের মানুষ খুবই সাহসী, কিন্তু আপনাকে হয় (রাশিয়ার সঙ্গে) চুক্তি করতে হবে, নইলে আমরা আপনাদের পাশে নেই। আর যদি আমরা না থাকি, তাহলে আপনাকে একাই লড়তে হবে।”
ট্রাম্প আরও অভিযোগ করেন, জেলেনস্কি “তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে জুয়া খেলছেন”।
জেলেনস্কি পাল্টা জবাবে বলেন, “হ্যাঁ, আমি জানি”, কিন্তু এরপরই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এএফপি জানায়, দুই নেতার বিতর্ক একসময় চিৎকার-চ্যাঁচামেচির পর্যায়ে পৌঁছে যায়।
বৈঠকের এমন পরিণতি ইউক্রেন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।