আত্মপ্রকাশের মাত্র একদিন পরই বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির ‘সংগঠক’ পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন শ্যামলী সুলতানা জেদনী। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টা ৫৬ মিনিটে নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি এ ঘোষণা দেন।
পোস্টে জেদনী উল্লেখ করেন, বিগত কয়েক মাস তার জন্য ছিল শিক্ষা, অভিজ্ঞতা ও সংগ্রামের সময়। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “আমার মনে হয়েছিল হাতে সময় কম, কিন্তু কাজ অনেক। তাই সেমিস্টার ড্রপ দিয়ে এই আন্দোলনকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছি।”
তবে বিশেষ কারণ উল্লেখ করে তিনি জানান, এখন সবকিছু থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। ব্যক্তিগতভাবে কোনো অনুশোচনা না থাকলেও সবচেয়ে বেশি আফসোস করছেন তার মায়ের জন্য যথেষ্ট সময় না দিতে পারার কারণে। তিনি বলেন, “গত ছয় মাসে ১২০ দিনও বাসায় থাকতে পারিনি, মায়ের হাতের রান্না খেতে পারিনি। আজ যখন সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তখনই দেখলাম মায়ের চোখেও পানি।”
নারী হিসেবে সাংগঠনিক জীবনে নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার অভিজ্ঞতাও শেয়ার করেন জেদনী। গভীর রাতে বাড়ি ফেরার সময় সমাজের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির শিকার হওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এসব উপেক্ষা করার ক্ষমতা সৃষ্টিকর্তা আমাকে দিয়েছেন, তাই কখনো পিছপা হইনি।”
তার বিদায়ের বার্তায় সংগঠন ও সহযোদ্ধাদের উদ্দেশে শুভকামনা জানিয়ে জেদনী বলেন, “৫৪ বছরের কুৎসিত ছাত্র রাজনীতির অবসান ঘটিয়ে সুস্থ ধারার ছাত্র রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করুন। যোগ্য নেতৃত্বকে প্রাধান্য দিন, মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলুন। আমি সাংগঠনিকভাবে না থাকলেও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপনাদের পাশে থাকব।”
সর্বশেষ, তিনি স্পষ্ট করে জানান, তার পুরো কর্মযাত্রায় সংগঠন থেকে কোনো ধরনের আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেননি।
সংগঠনের প্রতি শুভকামনা জানিয়ে এই লড়াকু নেত্রীর বিদায়, তবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার অবস্থান অবিচল থাকবে বলেই জানিয়েছেন তিনি।