পাঁচ সংস্কার কমিশন তাদের সুপারিশমালা নিয়ে মতবিনিময় সভা করেছে, যেখানে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা পর্যালোচনা করা হয়। আলোচনায় কোনো সুপারিশ সাংঘর্ষিক বা বিরোধপূর্ণ কিনা, তা খতিয়ে দেখার বিষয়টিও গুরুত্ব পায়। শুক্রবার জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার সংবিধান সংস্কার কমিশনের কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সংবিধান সংস্কার কমিশনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জমা দেওয়া বিভিন্ন কমিশনের সুপারিশমালা সমন্বয় ও পর্যালোচনার জন্য কমিশন প্রধানদের মধ্যে মতবিনিময় সভা আয়োজন করা হয়। এতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রস্তাবিত পদক্ষেপগুলো নিয়ে আলোচনা হয়। অংশগ্রহণকারী কমিশনগুলোর মধ্যে ছিল সংবিধান সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন এবং বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান জনাব সফর রাজ হোসেন, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধানের প্রতিনিধি বিচারপতি এমদাদুল হক।
সভায় একটি কমিশন প্রধান মন্তব্য করেন, “রাষ্ট্র সংস্কারে সব কমিশনের সুপারিশ গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এখন সমন্বয়ের মাধ্যমে এগুলো বাস্তবায়নের পথ তৈরি করছি। একক কোনো উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। এটি অনেকটা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের মতো, সব একত্রে কাজ না করলে মানুষ খোঁড়া হয়ে যায়। রাষ্ট্র সংস্কারের জন্যও তাই সব সুপারিশের সমন্বয় প্রয়োজন। এখানে কোনটি অগ্রাধিকার পাবে, সেটি নির্ধারণ করার চেষ্টা চলছে।”
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “আমরা সমন্বয়ের মাধ্যমে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি, যেন নির্বাচনের পথে এগিয়ে যাওয়া যায়।”
প্রসঙ্গত, গত ১৫ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার কাছে সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন, পুলিশ প্রশাসন এবং বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন তাদের সুপারিশমালা হস্তান্তর করে। এরপর কমিশনগুলোর কাজের মেয়াদ ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
২০ জানুয়ারি প্রথমবারের মতো কমিশনগুলো পর্যালোচনা ও সমন্বয়ের জন্য মতবিনিময় করে। শুক্রবার অনুষ্ঠিত বৈঠকটিও ছিল এই প্রক্রিয়ার অংশ। এই আলোচনা থেকে দ্রুত কার্যকর একটি নীতিমালা তৈরির মাধ্যমে রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে।
বৈঠকে সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের জন্য একটি কার্যকর রূপরেখা প্রণয়ন এবং সেগুলোতে কোনো দ্বিমত রয়েছে কিনা, তা চিহ্নিত করার ওপর জোর দেওয়া হয়। কমিশনগুলো আশা করছে, এই সমন্বয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্র সংস্কারের একটি সুস্পষ্ট রূপরেখা তৈরি হবে, যা দেশকে একটি ইতিবাচক পথে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে।