বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চলমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে, যা বিশেষত ঢাকার রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত একটি বিষয় হয়ে উঠেছে। বুধবার ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের এক সৌজন্যমূলক সাক্ষাতের সময় এ বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে ভারতীয় হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে যে, ভারতের রাজধানী দিল্লিতে অবস্থানরত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক কিছু বিবৃতি দুই দেশের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের জন্য হুমকি স্বরূপ এবং এই ধরনের বিবৃতি কোনোভাবেই সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য সহায়ক নয়।
সাক্ষাতের পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তৌহিদ হোসেন জানান, “ভারতে বসে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বিবৃতি দিচ্ছেন, তা আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক নয় এবং এই ধরনের বক্তব্য দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আমরা চাই না তিনি ভারতে বসে এমন কিছু বলুন, যা সম্পর্ক উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করবে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, ভারতের গণমাধ্যমে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে যেসব খবর প্রচারিত হচ্ছে, তা অত্যন্ত অতিরঞ্জিত। বাংলাদেশের ঘটনাবলির প্রেক্ষিতে এমন ধরনের সংবাদ পরিবেশন দুই দেশের সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
বৈঠকের পর ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা সাংবাদিকদের বলেন, এই সাক্ষাৎটি কেবল একটি সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ ছিল এবং এতে কোনো নির্দিষ্ট এজেন্ডা ছিল না। তিনি আরও বলেন, “ভারত দুই দেশের মানুষের স্বার্থে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে আগ্রহী।” তবে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বিবৃতির প্রসঙ্গে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে, তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বৈঠক শেষে প্রকাশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চায় এবং বিশেষত জনগণকেন্দ্রিক সম্পৃক্ততার ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এ সময় বিশেষ করে সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধ, তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সম্পাদন এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে জোর দেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয় যে, উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, “আমাদের সরকার সব ধর্মীয় ও জাতিগত গোষ্ঠীর সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুত ।