ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে আজ বার্লিনে মুখোমুখি হচ্ছে স্পেন ও ইংল্যান্ড। খেলাটি অনুষ্ঠিত হবে বার্লিনের অলিম্পিয়াস্টেডিওনে রাত ১টায়। উড়ন্ত স্পেনের বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগে, নক আউট পর্বের উজ্জীবিত ইংল্যান্ড নিজেদের প্রস্তুতি নিতে কোনো কমতি রাখেনি।
স্পেন ইতোমধ্যেই ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের হেনরি ডিলানে ট্রফি জয়ের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, তবে ১৯৬৬ বিশ্বকাপ জয়ী ইংল্যান্ড এখন বড় শিরোপা জয়ের অপেক্ষায়। তিন বছর আগে ইতালির কাছে ফাইনালে টাইব্রেকারে পরাজিত হওয়া ইংল্যান্ড এবার সেই ভুল আর করতে চায় না।
স্পেনের কোচ লুইস ডি লা ফুয়েন্তের তারকা নির্ভর দল ও গ্যারেথ সাউথগেটের প্রতিভাবান ইংল্যান্ডের কেউই কারো থেকে কম নয়। সেমিফাইনালে কঠিন লড়াইয়ের পর ফাইনালে পৌঁছেছে দুদল। বিশ্বকাপের ফাইনালিস্ট ফ্রান্সকে হারিয়ে স্পেন এবং নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে পিছিয়ে পড়েও ইংল্যান্ড টানা দ্বিতীয় ইউরোর ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে।
কিলিয়ান এমবাপ্পের নেতৃত্বাধীন ফ্রান্স এবং গতবারের রানার্স-আপ ইংল্যান্ড এবারের আসরে হট ফেবারিট ছিল। এদিকে, ডি লা ফুয়েন্তের স্পেন কিছুটা পিছিয়ে ছিল। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে বড় আসরের ব্যর্থতাই তাদেরকে পিছিয়ে দিয়েছে। গ্রুপ পর্বে তথাকথিত ‘গ্রুপ অব ডেথ’এ পড়ার পর থেকেই স্পেনের সামনে এগিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে শঙ্কা ছিল। ২০১৮ বিশ্বকাপ রানার্স-আপ ক্রোয়েশিয়া, বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইতালি এবং অপরিচিত আলবেনিয়ার বিরুদ্ধে স্পেন কতটা নিজেদের প্রমাণ করতে পারবে তা নিয়ে শুরু থেকেই সন্দেহ ছিল। তবে দুর্দান্ত সূচনা করে গ্রুপ পর্বে শতভাগ রেকর্ড নিয়ে নক আউট পর্বে টিকেট পায় স্পেন।
শেষ ষোলতে টুর্নামেন্টের সারপ্রাইজ প্যাকেজ জর্জিয়া যখন এগিয়ে গিয়েছিল, তখনো স্পেন কোনো প্রতিপক্ষের গোল হজম করেনি। রবিন লি নরমান্ডের আত্মঘাতি গোলে পিছিয়ে পড়ার পরও স্পেন জয়লাভ করে কোয়ার্টার ফাইনালে স্বাগতিক জার্মানির মুখোমুখি হয়। স্টুটগার্টে মিকেল মেরিনোর শেষ মুহূর্তের গোলে জার্মানির বিদায় নিশ্চিত হয়। গত বছর নেশন্স লীগের শিরোপা জয় বাদে, এ নিয়ে ষষ্ঠবার বড় কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে স্পেন। স্পেন এবার রেকর্ড চতুর্থ শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নামবে।
ডটমুন্ডে রোনাল্ড কোম্যানের নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে কঠিন লড়াইয়ের মাধ্যমে ইংল্যান্ড জয়লাভ করে। সার্বিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচটি ছাড়া নক আউট পর্বে তিন ম্যাচেই ইনজুরি টাইম, অতিরিক্ত টাইম ও পেনাল্টিতে জয় আদায় করতে হয়েছে। গ্রুপ পর্বে ডেনমার্ক ও স্লোভেনিয়ার সঙ্গে ড্র সমর্থকরাও ভালো চোখে দেখেনি। কোচ গ্যারেথ সাউথগেটকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে জুড বেলিংহাম বাইসাইকেল কিকের গোলে ইংল্যান্ডকে রক্ষা করেন। এরপর কোয়ার্টার ফাইনালে বুকায়ো সাকা দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তোলেন। সেমিফাইনালে ডাচদের বিপক্ষে লড়াইটা আরও কঠিন হয়ে উঠে। প্রতিপক্ষ জাভি সিমন্সের গোলে পিছিয়ে পড়ার পর ইংল্যান্ড তাদের সেরা পারফরমেন্স দেখিয়ে ফাইনালের পথে এগিয়ে যায়। হ্যারি কেনের পেনাল্টির গোলে প্রথমে সমতায় ফিরে ইংল্যান্ড। ৯০ মিনিট শেষে যোগ হওয়া সময়ে কোল পালমারের এ্যাসিস্টে ওলি ওয়াটকিন্স গোল করে ইংল্যান্ডকে জয়ের পথ দেখান। কোয়ার্টার ও সেমিফাইনালে পিছিয়ে পড়েও ইউরোর ফাইনালে ওঠার নতুন রেকর্ড গড়েছে ইংল্যান্ড। একইসঙ্গে নক আউট পর্বে ইউরোর ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ড গড়েছেন কেন।