লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে অন্তত ৪১ জনের প্রাণহানি , দগ্ধ দেড়শতাধিক কানে বাজছে একজনের আর্তনাদ, “ভাই, আমাকে একটু বাঁচান ভাই। আমার মেয়েটা এখনো ছোট। বাপ বাপ করে মারা যাবে সে।” এমন আর্তনাদ শুধু একজনের নয় , কেউ সন্তান হারিয়েছেন, কারো বাবা, কারো মা, কারো স্বামী , কারো স্ত্রী , কারো বা ভাই–বোন , শত মানুষের আর্তনাদ । গত বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে ঝালকাঠির পোনাবালিয়া ইউনিয়নের সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে ভয়াবহ আগুন লাগে। এতে অন্তত ৪১ জনের জনের প্রাণহানি ঘটে এবং আগুনে দগ্ধ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছে অন্তত দেড়শতাধিক যাত্রী । দুর্ঘটনার সময় অনেক যাত্রী নদীতে ঝাঁপ দিয়ে বেঁচে গেলেও এখনো নিখোঁজ রয়েছেন শতাধিক। স্বজনদের আহাজারিতে ঝালকাঠি লঞ্চঘাট এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। নিখোঁজ স্বজনদের তারা খোঁজ করছেন। দুর্ঘটনার সময় কেবিন ও ডেকের বেশিরভাগ যাত্রী ঘুমিয়ে ছিলেন। দগ্ধ যাত্রীদের উদ্ধার করে প্রথমে ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল ও বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও কোস্ট গার্ডের ডুবুরি দল সুগন্ধা ও বিষখালী নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। ফায়ার সার্ভিস ও বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঢাকার সদরঘাট থেকে পাঁচ শতাধিক যাত্রী নিয়ে তিন তলা এমভি অভিযান-১০ লঞ্চটি বরগুনার উদ্দেশে যাত্রা করে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে সুগন্ধা নদীর দপদপিয়া এলাকায় লঞ্চটিতে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে যাওয়া লঞ্চ যাত্রীদের প্রায় সবাই ইঞ্জিন রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে দাবি করেন । লঞ্চটির ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী নিয়ে রওয়ানা হয়েছিল। লঞ্চে ছিল না অগ্নিনির্বাপণের কোনো ব্যবস্থা। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪১টি লাশ বরগুনা জেলা প্রশাসকের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই ঘটনায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক প্রকাশ করেছেন।
বিস্তারিত