দিনাজপুরে এক যৌথসভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, তাদের দল একটি নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের নির্ধারিত রোডম্যাপ দেখতে চায়। তিনি বলেন, “আমরা এমন একটি নির্বাচন চাই, যেখানে দেশের মানুষ নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে, ভয় ও বাধাহীনভাবে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবে।”
শনিবার দিনাজপুর জেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত যৌথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদু আরও জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ডিসেম্বর অথবা তার দু’এক মাস আগে বা পরে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। এই নির্বাচনের মাধ্যমেই দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, “বিএনপি আবারও জনগণের ভোটে ক্ষমতায় ফিরে আসবে। অতীতেও ভোটের মাধ্যমেই আমরা জনগণের আস্থা অর্জন করে সরকার গঠন করেছি।” পাশাপাশি ক্ষমতায় গেলে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।
দুদু জোর দিয়ে বলেন, “যতদিন না পর্যন্ত আমরা মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে পারছি, ততদিন রাজপথে থেকে আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। আমাদের সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি।” তিনি আরও বলেন, “আমরা এই দানব ও খুনি হাসিনা সরকারকে ৫ আগস্ট বিদায় জানিয়েছি। এই সরকার শুধু জনগণের অধিকার হরণই করেনি, বরং বাংলাদেশের সংবিধান ও স্বাধীনতাকেই বিপন্ন করেছে।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন দিনাজপুর জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোফাজ্জল হোসেন দুলাল। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) আব্দুল খালেক, মো. আমিনুল ইসলাম, যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ-সভাপতি ব্যারিস্টার একেএম কামরুজ্জামান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এজেডএম রেজওয়ানুল হক এবং আক্তারুজ্জামান মিয়া।
যৌথসভায় জেলা বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মী, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। সভা ছিল বিএনপির চলমান আন্দোলনকে আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পদক্ষেপ, যেখানে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ভবিষ্যৎ আন্দোলনের দিকনির্দেশনা দেন।
শামসুজ্জামান দুদুর বক্তব্যে বিএনপির আন্দোলন ও নির্বাচনমুখী প্রস্তুতির বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা পাওয়া যায়, যেখানে তিনি একদিকে সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করেন, অন্যদিকে একটি গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি দেন।