যশোরের অভয়নগর উপজেলার চলিশিয়া ইউনিয়নের কোটা গ্রামের পূর্বপাড়ায় চাঞ্চল্যকর একটি ঘটনা ঘটেছে, যা দেখে হতবাক হয়েছে এলাকাবাসী। বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যাওয়া হাবিবুর রহমান বিশ্বাসের (৭২) মরদেহ ১৬ ঘণ্টা বাড়ির উঠানে পড়ে ছিল, কারণ তার সন্তানরা জমিজমার ভাগ-বাটোয়ারা না মেটা পর্যন্ত দাফনে বাধা দেয়।
হাবিবুর রহমান বিশ্বাস ছিলেন একজন কৃষক। তার চার স্ত্রী ও নয় সন্তান রয়েছে। তিনি জীবনের শেষ দিনগুলো ছোট স্ত্রী ও ছোট ছেলে সোহেল বিশ্বাসের সঙ্গে কাটিয়েছিলেন এবং মৃত্যুর আগে ছোট স্ত্রীর নামে ৮৩ শতাংশ জমি লিখে দেন। এ নিয়েই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল।
বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে সকালে বাড়িতে আসেন তার বড় ছেলেরা—আতাউর রহমান, সুমন, আনোয়ার ও হাফিজুর। তারা দাবি করেন, জমির ভাগ না মেটানো পর্যন্ত মরদেহ দাফন করা যাবে না। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিস বসানো হয়, যেখানে ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি, মেম্বার ও গ্রামবাসীরা উপস্থিত ছিলেন।
সোহেল বিশ্বাস জানান, তার সৎ ভাইয়েরা বাবার কবর খুঁড়তেও দেয়নি। পরে সালিসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ছোট স্ত্রীর নামে থাকা ৮৩ শতাংশ জমি থেকে ৫০ শতাংশ বড় ভাইদের নামে লিখে দেওয়ার শর্তে মুচলেকা নেওয়া হয়। এরপরই দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়, এবং মৃত্যুর ১৬ ঘণ্টা পর, রাত ১০টার দিকে মরদেহ দাফন করা হয়।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার কামরুজ্জামান মজুমদার জানান, জমি নিয়ে পারিবারিক বিরোধ সালিসের মাধ্যমে মীমাংসা করা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান সানা আব্দুল মান্নান এ ঘটনাকে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন, গ্রামবাসীদের সহায়তায় সমস্যা সমাধান করা হয়েছে।