রাজধানীর মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়ায় পুলিশের কাছ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাঁচ মামলার আসামি গোলাম মোস্তফাকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত।
বুধবার (১২ মার্চ) সকাল ১১টার দিকে মোহাম্মদপুর থানার একটি টিম লালমাটিয়ার বি ব্লকের ৭ নম্বর রোডে গোলাম মোস্তফাকে গ্রেপ্তার করতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশের ওপর হামলা, আসামি ছিনিয়ে নেওয়া
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোলাম মোস্তফাকে গ্রেপ্তার করে হাতকড়া পরানোর সময় হঠাৎ ৮-১০ জন সিকিউরিটি গার্ড ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তারা ধাক্কাধাক্কি করে গোলাম মোস্তফাকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়। এ সময় ধস্তাধস্তিতে পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী ইফতেখার হাসান বলেন, “একটি সংঘবদ্ধ দল মব তৈরি করে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামিকে ছিনিয়ে নিয়েছে।”
আসামির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীর কবির নানককে ২৫ লাখ টাকা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ঢাকার বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে পাঁচটি হত্যা মামলা রয়েছে। মামলাগুলো হলো—
মোহাম্মদপুর থানায়: মামলা নম্বর- ৬৯
রামপুরা থানায়: মামলা নম্বর- ১৮
বাড্ডা থানায়: মামলা নম্বর- ১৬
ক্যান্টনমেন্ট থানায়: মামলা নম্বর- ১৬
চকবাজার থানায়: মামলা নম্বর- ৫৬
সিকিউরিটি গার্ডদের বক্তব্য
ঘটনায় জড়িত এক সিকিউরিটি গার্ড জানান, “এভোরোজ স্কুলের মালিক গোলাম মোস্তফা স্কুল থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠছিলেন। ঠিক সে সময় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে আসে এবং এক হাতে হাতকড়া লাগায়। তখন আমরা পুলিশকে ঘিরে ধরি এবং তাকে ভেতরে নিয়ে যাই।”
আরেকজন সিকিউরিটি গার্ড বলেন, “আমাদের স্যারকে আমাদের সামনেই গ্রেপ্তার করা হবে, এটা হতে পারে না। আমরা পুলিশকে বাধা দিই এবং তাদের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেখাতে বলি। কিন্তু তারা কেবল মোবাইলে কাগজ দেখায়, কোনো লিখিত ওয়ারেন্ট দেখায়নি।”
পুলিশের প্রতিক্রিয়া
এ বিষয়ে তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) জুয়েল রানা বলেন, “পুলিশের একটি টিম বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পাঁচ মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার করতে গিয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় আওয়ামী লীগের কিছু লোকজন পুলিশের কাজে বাধা দেয় এবং মব তৈরি করে আসামিকে ছিনিয়ে নেয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে, শিগগিরই দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে, সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।”