বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়কদের উদ্যোগে গঠিত নতুন ছাত্র সংগঠন “বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ”-এর কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে, কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, পাল্টাপাল্টি স্লোগান, হাতাহাতি এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন সংগঠনের কমিটি ঘোষণা করা হয়। তবে কমিটিতে পদ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, কমিটিতে তাদের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব দেওয়া হয়নি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরা দাবি করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সত্ত্বেও তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি।
বিকেল ৪টার পর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী মধুর ক্যান্টিনের সামনে এসে স্লোগান দিতে থাকেন—
তাঁরা সংগঠনের সাবেক সমন্বয়ক রিফাত রশীদকে আরও গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ার দাবি জানান এবং তার পক্ষে স্লোগান দেন।
একপর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাল্টা স্লোগান দেয়—
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আবার ফিরে এসে বিক্ষোভে অংশ নেয়, যার ফলে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।
কমিটি ঘোষণার সময়ও উত্তেজনা বিরাজ করছিল। একপর্যায়ে বিকেল পাঁচটার দিকে নতুন কমিটির নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন। মিছিলটি মল চত্বরে পৌঁছালে প্রথম দফায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে ধাওয়া দেয়।
সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সামনে আবার সংঘর্ষ ঘটে। একপক্ষ আরেক পক্ষকে মারধর করে, তবে কিছু শিক্ষার্থী পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে।
সংঘর্ষের মধ্যেই বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
কেন্দ্রীয় কমিটিতে—
মুখপাত্র: আশরেফা খাতুন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটিতে—
রাত আটটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে সরাসরি কোনো সংঘর্ষ না হলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে তীব্র আলোচনা চলছে। অনেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিপত্য নিয়ে সমালোচনা করছেন এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি নিয়ে বিতর্ক চলছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা মন্তব্য করেছেন—
“পুরান রাজনৈতিক বন্দোবস্ত… ঢাবির পক্ষে আর রাজনৈতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্তর থেকে উত্তরণ সম্ভব হলো না। ঢাবির ঐতিহাসিক পরাজয়।”