১১ কোটির বেশি নাগরিকের ৪৬ ধরণের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস ও বিক্রির অভিযোগে কাফরুল থানায় করা মামলায় গ্রেপ্তার ডাটা সেন্টারের সাবেক পরিচালক তারেক এম বরকতউল্লাহকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালত শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এদিন তাঁকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা কাফরুল থানার উপপরিদর্শক মো. আবু হানিফ। আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে বুধবার রাজধানীর কাফরুলের উত্তর কাজীপাড়া থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ৯ অক্টোবর এনামুল হক বাদী হয়ে সজীব ওয়াজেদ জয়, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে কাফরুল থানায় মামলা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরো ১৫ থেকে ২০ জনকে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিসেসের পরিচালক ওয়াহিদুর রহমান শরীফ, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের সাবেক নির্বাহী পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মাহবুবুর রহমান, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের সাবেক পরিচালক (অপারেশনস) আবদুল বাতেন, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ রক্ষণাবেক্ষণ প্রকৌশলী আশরাফ হোসেন, জাতীয় টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) রাকিবুল হাসান, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাবেক উপসচিব মো. রেজাউল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক হায়দার আলী, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের সাবেক উপাচার্য মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন নিবন্ধক অফিসের সাবেক সিস্টেম বিশ্লেষক অলিউল হাসান, আইসিটি বিভাগের সাবেক উপসচিব তবিবুর রহমান, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের সাবেক সহকারী পরিচালক (আইনি ও যাচাই) সারওয়ার হোসেন, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন শাখার সাবেক পরিচালক (নিবন্ধন ও প্রবাসী) আবদুল মমিন সরকার, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন শাখার সাবেক পরিচালক (বাজেট, হিসাব ও সাধারণ সেবার ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ম্যানেজার (সিকিউরিটি অপারেশন) মাহিদুর রহমান খান এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের সফটওয়্যার ডেভেলপার সিদ্দিকুর রহমান।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, জয় ও পলক একটি সংগঠিত সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নাগরিকদের এনআইডি তথ্য বিক্রির সুবিধা দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা জাতীয় নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে, ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিসেস লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে জনগণের ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে ব্যবসার অনুমতি দেন, যে তথ্য দেশি-বিদেশি প্রায় ১৮২টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করার তথ্য পাওয়া গেছে। তৃতীয় পক্ষের কাছে তথ্য পাচার হওয়ায় বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা ও অস্থিরতা সৃষ্টি করে অপরাধ করেছেন আসামিরা।