দেশের বিভিন্ন জেলায় চলমান বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭১ জনে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত এই সংখ্যা জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। মৃতদের মধ্যে ৪৫ জন পুরুষ, ৭ জন মহিলা এবং ১৯ জন শিশু। সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক-ই-আজম।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কুমিল্লায় ১৯ জন, ফেনীতে ২৮ জন, চট্টগ্রামে ৬ জন, খাগড়াছড়িতে ১ জন, নোয়াখালীতে ১১ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১ জন, লক্ষ্মীপুরে ১ জন, কক্সবাজারে ৩ জন এবং মৌলভীবাজারে ১ জন মারা গেছেন। এছাড়া মৌলভীবাজারে একজন নিখোঁজ রয়েছেন।
বন্যায় প্লাবিত হয়েছে ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেটের মোট ৬৮টি উপজেলা। বন্যার পানিতে আটকা পড়ে আছে ৬ লাখ ৫ হাজার ৭৬৭টি পরিবার। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৫১ লাখ ৮ হাজারেরও বেশি।
ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তায় ৩ হাজার ৬১৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে, যেখানে ৩ লাখ ৬ হাজারের বেশি মানুষকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদানের জন্য বিভিন্ন সংস্থা ও প্রশাসন কাজ করছে। পানিবন্দী মানুষদের উদ্ধারে নৌকা, স্পিডবোটসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ব্যবহার করা হচ্ছে।
বন্যায় ফসল, ঘরবাড়ি এবং অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অনেক স্থানে। প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে এবং বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু করা হবে।
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসন, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা একযোগে কাজ করছে। জরুরি সহায়তা এবং ত্রাণ কার্যক্রম দ্রুততম সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।