অতিবৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল ও ভারত থেকে নেমে আসা নদীর পানির তোড়ে কুমিল্লার বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ জানিয়েছেন, গোমতী নদীর পানি বর্তমানে বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই কারণে নদীর চরের অনেক ঘরবাড়ি ইতিমধ্যেই তলিয়ে গেছে। বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত পানি বিপৎসীমা থেকে আরও ৫৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।
গোমতী নদীর তীরের বেশ কিছু জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে, যা ভারতের ত্রিপুরায় অব্যাহত ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নদীর পানির প্রবাহ বাড়ার ফল। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গোমতী নদীর আদর্শ সদর, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, দেবিদ্বার, মুরাদনগর উপজেলাগুলোর অন্তত ২৫টি স্পট এখন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
চৌদ্দগ্রাম ও নাঙ্গলকোট উপজেলার নিচু এলাকাগুলোও প্লাবিত হয়েছে, যেখানে ঘরবাড়ি এবং বিভিন্ন প্রজেক্টে পানি ঢুকে পড়েছে এবং মাছের ঘের ভেসে গেছে।
প্রবল বর্ষণের ফলে কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। নগরীর চকবাজার, কান্দিরপাড়, সালাউদ্দিন মোড়, চর্থা, ঠাকুরপাড়া, ডিসি রোড, বাগিচাগাঁওসহ বিভিন্ন সড়কে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
তিতাস উপজেলার আসমানিয়া বাজারে গোমতীর স্রোতে স্থানীয়ভাবে কাঠ ও স্টিল দিয়ে তৈরি একটি সেতু ভেঙে গেছে। স্থানীয়দের মতে, গত ৪০ বছরে গোমতী নদীর এত প্রবল স্রোত দেখা যায়নি।
গোমতী নদীর উত্তরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, বুড়িচং বাবুবাজার এলাকায় নদীর পানি পাড়ের প্রায় সমান হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও পানি বাঁধ উপচে পড়ার মতো অবস্থা। স্থানীয়রা সারারাত বাঁধের বিভিন্ন অংশ মেরামতের চেষ্টা চালিয়ে গেছে, যাতে বাঁধ ভেঙে না যায় এবং গোমতী পাড়ের লাখো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।