বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ অনুরোধ করেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা যেন রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকেন। সোমবার (১২ আগস্ট) রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
ব্যারিস্টার পার্থ বলেন, “আমি অনুরোধ করেছি, উপদেষ্টারা যেন রাজনৈতিক বক্তব্য না দেন। হঠাৎ করে দেখা যাচ্ছে কিছু রাজনৈতিক বক্তব্য, যা মানুষকে ভুল বার্তা দিতে পারে এবং প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। তাই তাদের এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।”
উপদেষ্টাদের বক্তব্যের পর ছাত্র-জনতার আন্দোলন আবার শুরু হওয়ার প্রসঙ্গে পার্থ বলেন, “প্রথম ধাপের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, যা রাজনৈতিক বক্তব্যের কারণে সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগকে বিদায় করা হয়েছে একটি বিপ্লবের মাধ্যমে, এবং জাতিকে শান্ত করার সময় দরকার। হাজার হাজার মানুষ এই সময়ে প্রাণ হারিয়েছেন। যদি উপদেষ্টারা রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকেন, তাহলে কোনো বিভ্রান্তি সৃষ্টি হবে না। এছাড়া তাদের একজন মুখপাত্র থাকতে পারে।”
শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এখনই এসব বিষয়ে কিছু বলা খুব তাড়াতাড়ি হবে। জনগণই ঠিক করবে, আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কী হবে।”
তিনি আরও বলেন, “গণহত্যার বিচার হবে সামনে, আরও অনেক তদন্ত চলছে, এবং এর ফলাফল জানার পর জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে। রাজনৈতিক দলের ভাগ্য জনগণই নির্ধারণ করে, এবং জনগণই সেই দলকে ক্ষমতায় আনে বা ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়।”
এর আগে, সোমবার সকালে আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “আপনারা আপনার দল পুনর্গঠন করুন, এবং নির্বাচন এলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুন। জনগণ ভোট দিলে আপনারা ভোটে অংশ নিন।”
আওয়ামী লীগের অবদান স্বীকার করে তিনি বলেন, “আপনারা দলকে গোছান, নতুন নেতৃত্ব নিয়ে সামনে এগিয়ে যান।”
এদিকে, সাখাওয়াত হোসেনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “আমরা উপদেষ্টাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, আপনারা উপদেষ্টা হয়েছেন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে। খুনিদের পুনর্বাসনের বিষয়ে সতর্ক থাকুন, আমরা স্বৈরাচারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়েছি এবং প্রয়োজনে পুনর্বাসনকারীদেরও সরাতে পিছপা হব না।”
আরেক সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, “৫ আগস্টের ঘটনার পর থেকে কিছু কুচক্রী মহল ক্যু করার চেষ্টা করছিল। আমরা ছাত্র-জনতা তা প্রতিহত করেছি, এবং ভবিষ্যতেও যেকোনো ষড়যন্ত্রকে রুখে দেবো।”
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক রিফাত রশীদ সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, “গণ-বিমুখী বক্তব্য দিলে সাখাওয়াত হোসেনের পরিণতি হাসিনার মতোই হবে। আমরা এখনও রাজপথ দখলে রেখেছি, ভুলে যাবেন না।”