জাতিসংঘ সম্প্রতি বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া সব সহিংসতার ঘটনায় পূর্ণ, স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানিয়েছে। নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ মহাসচিবের দপ্তরের উপ-মুখপাত্র ফারহান হক সোমবার (১২ আগস্ট) এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সহিংসতা সম্পর্কে জাতিসংঘের গভীর উদ্বেগের প্রেক্ষিতে এই বিবৃতিটি প্রকাশিত হয়।
ফারহান হক তার বিবৃতিতে বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশের জনগণের প্রতি তার পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করেছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে, বাংলাদেশে মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে কোনো আপস করা যাবে না। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে সহিংসতার ঘটনায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের প্রতি সহমর্মিতা জানানো হচ্ছে এবং এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
জাতিসংঘের মহাসচিবের দপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশে আসন্ন সংসদ নির্বাচনের আগে পরিস্থিতি শান্ত রাখা অত্যন্ত জরুরি। মহাসচিব অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভূমিকা সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছেন এবং সেই সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সহায়তা প্রত্যাশা করেছেন। তিনি এই প্রক্রিয়ায় সব পক্ষের অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
ফারহান হক তার বিবৃতিতে আরো বলেন, মহাসচিবের দৃষ্টিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যক্রমকে এমনভাবে পরিচালনা করতে হবে, যাতে তা অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়। তিনি উল্লেখ করেন যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নারী, যুব সম্প্রদায় এবং সমাজের সকল স্তরের মানুষের কথা শুনতে হবে এবং তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে। মহাসচিব বিশ্বাস করেন, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সকল অংশীদারের অংশগ্রহণ এবং তাদের মতামত প্রতিফলিত হলে নির্বাচনী প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ এবং গ্রহণযোগ্য হবে।
জাতিসংঘ মহাসচিবের এই বিবৃতির মধ্যে দিয়ে এটি স্পষ্ট যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং শান্তি বজায় রাখার প্রতি গভীরভাবে মনোযোগী। বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, তা নিরসনের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা জরুরি বলে মনে করে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘ মহাসচিবের দপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সকল পক্ষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এবং সমাজের সকল স্তরের মানুষকে যুক্ত করতে জাতিসংঘ সবসময় প্রস্তুত রয়েছে। মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আশা প্রকাশ করেছেন যে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে এবং শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।