আজ ১জুলাই থেকেই চালু পেনশন কর্মসূচি ‘প্রত্যয়’

মোঃ মাহবুবুল আলম 81 বার পঠিত
সময় : সোমবার, জুলাই ১, ২০২৪

বাংলাদেশ সরকার নতুন একটি পেনশন কর্মসূচি “প্রত্যয়” চালু করতে যাচ্ছে, যা আজ থেকেই কার্যকর হবে। যদিও এই কর্মসূচি নিয়ে বিভিন্ন স্তরের বিরোধিতা এবং বিতর্ক চলছে, তবুও এটি বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে।

নতুন এই পেনশন কর্মসূচিতে কিছু উল্লেখযোগ্য দিক নিম্নে দেওয়া হলো:

অংশগ্রহণকারীদের জন্য সুবিধা:

এই কর্মসূচিতে সরকারি এবং বেসরকারি উভয় সেক্টরের কর্মীরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
অবসর নেওয়ার পর মাসিক পেনশন সুবিধা পাবেন।
আবেদন প্রক্রিয়া:

প্রাথমিকভাবে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।
আবেদন প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুত করার জন্য একটি বিশেষ পোর্টাল চালু করা হয়েছে।
অর্থায়ন ও অবদান:

কর্মীর অবদান এবং সরকারের অবদান উভয়ই থাকছে এই কর্মসূচিতে।
কর্মীরা তাদের মাসিক বেতনের নির্দিষ্ট একটি অংশ পেনশন ফান্ডে জমা দেবেন।
পেনশন সুবিধার মেয়াদ:

নির্দিষ্ট বয়সে পৌঁছানোর পর থেকে আজীবন পেনশন সুবিধা পাওয়া যাবে।
পেনশন সুবিধার পরিমাণ কর্মীর অবদানের পরিমাণের ওপর নির্ভর করবে।
অতিরিক্ত সুবিধা:

পেনশনকারীদের জন্য বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা থাকবে।
বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
বিরোধিতার কারণ:

কিছু বিরোধী দল ও সংস্থা মনে করছেন যে, এই কর্মসূচি সরকারের আর্থিক দায়িত্বের চাপ বাড়াবে।
এছাড়া, সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কাও প্রকাশ করা হচ্ছে।
এই কর্মসূচি নিয়ে ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় প্রতিক্রিয়াই আসছে। তবে এটি বাস্তবায়িত হলে দেশের সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় একটি বড় পরিবর্তন আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের নতুন পেনশন কর্মসূচি “প্রত্যয়” চালু হওয়ার প্রাক্কালে শিক্ষকদের মধ্যে কিছু বিরোধিতা এবং আন্দোলনের সূচনা হয়েছে। আজ ১ জুলাই থেকে এই পেনশন কর্মসূচি চালু হচ্ছে, যা নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন আন্দোলনে রয়েছে এবং কর্মবিরতিতে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে।

প্রত্যয় পেনশন কর্মসূচির মূল দিকগুলো:

বাধ্যতামূলক অংশগ্রহণ:

১ জুলাই থেকে যারা রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বায়ত্তশাসিত, স্বশাসিত সংস্থায় নতুন চাকরিতে যোগ দেবেন, তাদের প্রত্যয় পেনশন কর্মসূচিতে যোগ দিতে হবে। এই কর্মসূচিতে যুক্ত হওয়ার পর প্রচলিত পদ্ধতিতে পেনশন পাওয়া যাবে না।আবেদন প্রক্রিয়া:

অংশগ্রহণকারীদের মাসিক চাঁদা কাটা হবে এবং প্রতিষ্ঠানও সমপরিমাণ টাকা দেবে।
কর্মচারীদের বেতনের ১০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ৫,০০০ টাকা কাটা হবে এবং প্রতিষ্ঠানও সমপরিমাণ টাকা জমা দেবে।
পেনশন সুবিধা:

৩০ বছর ধরে মাসিক ২,৫০০ টাকা জমা দিলে অবসরের পর মাসিক ৬২,৩৩০ টাকা পেনশন পাওয়া যাবে।
পেনশন সুবিধা আজীবন মিলবে এবং এটি আয়করমুক্ত হবে।
পেনশনের টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হবে।
বিরোধিতা ও আন্দোলন:

বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষকরা এই কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত না করার দাবি জানিয়েছেন এবং কর্মবিরতিতে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী,আজ ১ জুলাই থেকেই প্রত্যয় কার্যকর হলো।
চলমান পেনশন কর্মসূচি:

প্রগতি, সুরক্ষা, প্রবাস, এবং সমতা নামে চারটি আলাদা পেনশন কর্মসূচি আগে থেকেই চালু রয়েছে।
এই কর্মসূচিগুলো বিভিন্ন শ্রেণীর জনগোষ্ঠীর জন্য প্রযোজ্য।
বিনিয়োগ ও অর্থায়ন:

গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩,৩২,৭৭৩ জন গ্রাহক চলমান চারটি কর্মসূচিতে যুক্ত হয়েছেন এবং ৯৭ কোটি টাকা জমা পড়েছে, যার মধ্যে ৯৩ কোটি টাকা ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতে, এই পেনশন কর্মসূচি সরকারী গ্যারান্টিযুক্ত, ঝুঁকিমুক্ত এবং নিরাপদ। তবে, এটি চালু হওয়ার আগে সমানভাবে কার্যকর হবে কিনা এবং কোনো বৈষম্য তৈরি হবে কিনা, তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা দরকার বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

নতুন পেনশন কর্মসূচি “প্রত্যয়” চালু হওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক ও সংশ্লিষ্ট সমস্যাগুলো এখানে তুলে ধরা হলো:

প্রত্যয় যাঁদের জন্য প্রযোজ্য:
রাষ্ট্রায়ত্ত এবং সরকারি ব্যাংক: বাংলাদেশ ব্যাংক, সরকারি মালিকানাধীন অন্যান্য ব্যাংক।
বিভিন্ন সংস্থা: বিএসইসি, আইডিআরএ, আইসিবি, পেট্রোবাংলা, ইপিবি, বিএসটিআই।
বিশ্ববিদ্যালয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।
করপোরেশন: সাধারণ বীমা করপোরেশনসহ অন্যান্য করপোরেশন।
অন্য সংস্থাগুলো: পদ্মা অয়েল, যমুনা অয়েল, যেখানে সরকারের হাতে ৫০ শতাংশের বেশি শেয়ারের মালিকানা রয়েছে।
বিরোধিতা এবং আন্দোলন:
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন:
তাঁরা দাবি করেছেন যে প্রত্যয় চালুর মাধ্যমে বিদ্যমান সুবিধা কমানো হচ্ছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসনের পরিপন্থী।
৩০ জুনের মধ্যে দাবি মেনে না নিলে, তাঁরা সর্বাত্মক কর্মসূচিতে যাবেন।
দাবি মেনে না নিলে পাঠদান, পরীক্ষা, প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ করার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়:
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা বলেছেন যে এটি তাঁদের জন্য বৈরী ও অবমাননাকর।
সরকারের যুক্তি:
অর্থ মন্ত্রণালয় এবং পেনশন কর্তৃপক্ষ:
বর্তমান পেনশনভোগীরা যেভাবে পেনশন পাচ্ছেন, সেভাবেই পাবেন।
১০ বছরের চাকরি আছে এমন চাকরিজীবীরা নতুন বা পুরনো যেকোনো ব্যবস্থায় থাকতে পারবেন।
বিদ্যমান ব্যবস্থায় খুব কমসংখ্যক প্রতিষ্ঠান পেনশন সুবিধা দেয়, ফলে নতুন ব্যবস্থা চালু করার প্রয়োজন রয়েছে।
পেনশন কর্তৃপক্ষের বক্তব্য:
গোলাম মোস্তফা:
যদি কোনো অসংগতি ধরা পড়ে, তা সংশোধন করা সম্ভব।
সরকারি কর্মচারীদের জন্য নতুন একটি পেনশন কর্মসূচি চালু হচ্ছে এক বছর পর, ফলে বিরোধিতা করা ঠিক নয়।
বিশেষজ্ঞদের মতামত:
সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম):
নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেছেন, সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি যদি বৈষম্যপূর্ণ হয়, তবে তা নিয়ে পুনর্বিবেচনা প্রয়োজন।
পেনশন কর্মসূচির বিস্তারিত:
চাঁদার পরিমাণ:
কর্মচারীদের বেতনের ১০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ৫,০০০ টাকা কাটা হবে।
প্রতিষ্ঠানও সমপরিমাণ টাকা জমা দেবে।
পেনশনের সুবিধা:
৩০ বছর ধরে মাসিক ২,৫০০ টাকা জমা দিলে অবসরের পর মাসিক ৬২,৩৩০ টাকা পেনশন পাওয়া যাবে।
পেনশনের টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হবে এবং এটি আয়করমুক্ত।
এই পেনশন কর্মসূচি চালু হওয়ার পর কর্মচারীদের আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা বৃদ্ধির আশা করা হচ্ছে। তবে এটি বাস্তবায়নে যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে, তা সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজর দিতে হবে যানানো হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

পুরাতন খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর