বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচারসহ চার দফা দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে সর্বাত্মক অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। এই কর্মসূচি সপ্তাহব্যাপী ‘রেজিস্টান্স উইক’-এর অংশ হিসেবে চলছে। ১৫ আগস্ট সকালে শিক্ষার্থীরা শাহবাগে জড়ো হতে শুরু করেন, যা পরিণত হয় এক বৃহৎ সমাবেশে।
শিক্ষার্থীদের উজ্জীবিত করতে সাংস্কৃতিক জোটের কর্মীরা বিভিন্ন গান পরিবেশন করেন। শাহবাগে অবস্থান নেওয়া হাজারো ছাত্র-জনতা দৃঢ়ভাবে শেখ হাসিনাসহ তার সহযোগীদের দ্রুত বিচারের দাবি জানান। তাদের বক্তব্য, দেশের ফ্যাসিবাদী কাঠামোকে ব্যবহার করে শেখ হাসিনা এবং তার দল যে হত্যাযজ্ঞ ও নিপীড়ন চালিয়েছে, তার বিচার দ্রুত নিশ্চিত করতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম ১৪ আগস্ট বিকেলে বলেন, “১৫ আগস্ট শোক দিবসের নামে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে প্রতিহত করা হবে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা সতর্ক আছি, কোনো রকম গণঅভ্যুত্থান প্রতিহত করার চেষ্টা করলে তাদের কঠোর প্রতিরোধের মুখে পড়তে হবে।”
সারজিস আলম আরও ঘোষণা দেন, “যতদিন পর্যন্ত জনগণের নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা না যায়, ততদিন আমরা রাজপথে থাকব।” তিনি উল্লেখ করেন, তাদের আন্দোলনের চারটি প্রধান দাবি আছে, যা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি:
1. বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন: ফ্যাসিবাদী কাঠামোকে ব্যবহার করে শেখ হাসিনা এবং তার দল যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, তার বিচার দ্রুত নিশ্চিত করতে হবে। এর জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।
2. সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের বিচার: আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের শরিক দলগুলো যেভাবে সংখ্যালঘুদের ওপর পরিকল্পিত হত্যা, ডাকাতি এবং লুণ্ঠন চালিয়েছে, তা গণঅভ্যুত্থানকে বিতর্কিত করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এসব অপরাধের দ্রুত বিচার করতে হবে এবং সংখ্যালঘুদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে হবে।
3. প্রশাসন ও বিচার বিভাগে সংশোধন: যারা প্রশাসন ও বিচার বিভাগে থেকে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দমনে হামলা, মামলা, এবং হত্যাযজ্ঞকে বৈধতা দিয়েছে, তাদের দ্রুত অপসারণ করে নতুন সরকারে তাদের নিয়োগ বাতিল করতে হবে এবং বিচারের আওতায় আনতে হবে।
4. সমতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করা: প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা এতদিন বৈষম্যের শিকার হয়েছে, তাদের জন্য দ্রুততম সময়ে সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে তারা নতুন সরকারের অধীনে ন্যায়বিচার পায়।
এই চার দফা দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীরা রাজপথে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে এবং তারা স্পষ্ট করেছে যে, তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা পিছপা হবে না।