ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননকে বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বিকেলে গুলশানের নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম বিভাগ থেকে সন্ধ্যায় পাঠানো এক খুদে বার্তায় মেননের গ্রেপ্তারের খবরটি নিশ্চিত করা হয়। তবে গ্রেপ্তারের পেছনের কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানানো হয়নি। এ ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আলোচনা শুরু হয়েছে, বিশেষত মেননকে ঘিরে যেসব রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে।
রাশেদ খান মেনন বাংলাদেশের রাজনীতিতে সুপরিচিত একটি নাম। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি হিসেবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে তিনি প্রথমে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন, যেখানে তার নেতৃত্বে বিভিন্ন সামাজিক কল্যাণমূলক কার্যক্রম চালু হয়। তার রাজনৈতিক জীবনজুড়ে তিনি শ্রমিক এবং সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের পক্ষে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়েছেন, যা তাকে জনপ্রিয় নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
সম্প্রতি দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনায় একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এই সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার মধ্যে কিছু মামলায় রাশেদ খান মেননকেও আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই পরিস্থিতি তাকে গ্রেপ্তারের পেছনে অন্যতম কারণ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও সরকার বা ডিএমপি থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি, তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, মেননের গ্রেপ্তার আসন্ন নির্বাচনের আগে একটি কৌশলগত পদক্ষেপ হতে পারে।
মেননের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। তার সমর্থকরা এ গ্রেপ্তারকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবে বিবেচনা করছেন, যেখানে সরকার পক্ষের নেতারা বলছেন যে, আইন অনুযায়ী যা করা হয়েছে তা সঠিক। এর ফলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে এবং এ নিয়ে নানা দিক থেকে আলোচনা ও সমালোচনা চলতে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই গ্রেপ্তার রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে এবং সামনে কি ঘটতে চলেছে তা নিয়ে সবার নজর এখন মেননের দিকে।