ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ সাত রাজ্য বা সেভেন সিস্টার্সের মধ্যে অন্যতম অরুণাচল প্রদেশে সম্প্রতি চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএএল) ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রায় ৬০ কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে পড়েছে। শুধু তাই নয়, চীনা সেনারা অরুণাচল প্রদেশের আনজাও জেলার কাপাপু এলাকায় ক্যাম্পও করেছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম অরুণাচল টোয়েন্টি ফোর ও নিউজফাইয়ের প্রতিবেদনে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাপাপু এলাকায় কাঠে আগুন ধরানো, পাথরের গায়ে চীনের নাম লেখা এবং চীনা খাদ্য সামগ্রীর ছবি দেখে বোঝা যায় যে, প্রায় এক সপ্তাহ আগে চীনা সৈন্যরা সেখানে অনুপ্রবেশ করেছে। পাথরের গায়ে ইংরেজিতে লেখা ২০২৪ সাল চীনা সেনাবাহিনীর ভারতীয় ভূখণ্ডে নিজেদের মালিকানা দাবি করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
নিউজফাই জানিয়েছে, ম্যাকমোহন লাইনের হাদিগ্রা পাসের কাছে কাপাপুতে ইন্দো-তিব্বত বর্ডার পুলিশের (আইটিবিপি) একটি ক্যাম্প রয়েছে। আনজাও জেলার প্রশাসনিক এলাকা চাগলাগাম ম্যাকমোহন লাইন থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে এবং গ্লাইতাকরু পাস চাগলাগাম থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
এর আগে, ২০২২ সালের আগস্টে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত ছবিতে দেখা গেছে যে, চীনা সামরিক বাহিনী হাদিগ্রা হ্রদের কাছে তাদের অবকাঠামো নির্মাণ কার্যক্রম তদারকি করছে। সেখানে তিনটি খননকারী মেশিন দিয়ে খনন কাজ পরিচালনা করতে দেখা গেছে। ২০২২ সালের ১১ আগস্ট চাগলাগাম থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরের ওই এলাকায় নির্মাণ কাজ পর্যবেক্ষণ করে চীনের সামরিক বাহিনীর এলআরপি টহল দল।
তারও আগে, ২০২১ সালে এনডিটিভি স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে জানায় যে, অরুণাচল প্রদেশে ভারতীয় ভূখণ্ডের ভেতরে চীনা সামরিক বাহিনী অন্তত ৬০টি ভবনের দ্বিতীয় ক্লাস্টারের নির্মাণ কাজ শুরু করেছে।
২০১৯ সালে চীনা সৈন্যরা অরুণাচলের ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রায় ৪০ কিলোমিটার ভেতরে ডোইমরু নালার ওপর একটি কাঠের সেতু তৈরি করে, যা দুই দেশের সৈন্যদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি করেছিল। এর পরের বছর, ২০২০ সালে দিবাং উপত্যকা জেলায় চীনা সৈন্যদের অনুপ্রবেশ নিয়ে উত্তেজনা বাড়ে।
চীন ভারতীয় অরুণাচল প্রদেশের বিশাল অংশের মালিকানা দাবি করে। ভারত-চীন সীমান্তের মোট দৈর্ঘ্য ৩,৪৮৮ কিলোমিটার হলেও, এর মধ্যে বিরোধপূর্ণ অরুণাচল প্রদেশের সীমান্ত এক হাজার ১২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ।