ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর ক্ষমতাচ্যুত হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের ছয়জন সাবেক প্রভাবশালী মন্ত্রী, পাঁচজন সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) এবং তাদের পরিবার ও সহযোগীসহ মোট ৩১ জনের সম্পদের তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ) সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দেশে ও বিদেশে থাকা সম্পদের তথ্য সংগ্রহ করতে শুরু করেছে।
বিএফআইইউ ইতোমধ্যে বিদেশে চিঠি পাঠিয়ে এই সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের নাম উল্লেখ করে তাদের সম্পদের তথ্য চেয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছে সরবরাহ করা হবে, যারা তাদের নিজ নিজ অনুসন্ধানের আওতায় তদন্ত করবে।
সংবাদ সূত্র অনুযায়ী, সাবেক মন্ত্রীদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এবং সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ। এছাড়া, সাবেক এমপিদের মধ্যে রয়েছেন জামালপুর-৩ আসনের মির্জা আজম, সিরাজগঞ্জ-২ আসনের জান্নাত আরা হেনরী, ময়মনসিংহ-১০ আসনের ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল, নাটোর-২ আসনের শফিকুল ইসলাম শিমুল, এবং পিরোজপুর-২ আসনের মহিউদ্দিন মহারাজ।
উল্লেখ্য, গত ১৫ বছর ধরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কালে এসব ব্যক্তিরা বিভিন্নভাবে দুর্নীতি, ঘুষ ও কমিশন বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল অর্থ-সম্পদ সংগ্রহ করেছেন, যার একটি বড় অংশ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। নতুন সরকার পাচার করা এই সম্পদ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে।
বিএফআইইউসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রাথমিক তদন্তে ৩১ জনের নামে দেশে-বিদেশে বিপুল অর্থ-সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। এছাড়া, সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের সহায়তায় বিদেশে আরও অর্থ পাচার হয়েছে বলে জানা গেছে। এই সম্পদগুলোর আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধান শুরু হয়েছে এবং পরবর্তীতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।