বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার বা ৫০০ কোটি ডলার আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা, যা পদ্মা সেতুর মতো বড় প্রকল্পের খরচের প্রায় দ্বিগুণ। উল্লেখ্য, পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। অর্থাৎ, আত্মসাৎকৃত অর্থ দিয়ে দুটি পদ্মা সেতুর মতো মেগা প্রকল্প নির্মাণ করা সম্ভব।
এ তথ্য প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিরক্ষা বিষয়ক ম্যাগাজিন গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পোরেশন। তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, রাশিয়ান কোম্পানি রোসাটম স্টেট অ্যাটমিক এনার্জি করপোরেশন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ কাজ পরিচালনা করছে, যা ২০১৭ সালে শুরু হয়েছিল। কাগজপত্রে প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ২৬৫ কোটি ডলার, যা প্রকৃতপক্ষে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি। এই বাড়তি বাজেটের সুযোগ নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা রোসাটমের সহায়তায় শেখ হাসিনাকে ৫০০ কোটি ডলার আত্মসাতের সুযোগ করে দেওয়া হয় বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০১৩ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকালে তার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক উপস্থিত ছিলেন। গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পোরেশনের দাবি, সে সময় টিউলিপ সিদ্দিক তার খালা-ভাগ্নির সম্পর্ক গোপন করে ঢাকা-মস্কো বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র চুক্তির মধ্যস্থতাও করেন। ২০০৯ সালে টিউলিপ সিদ্দিক, তার মা শেখ রেহানা এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক ‘প্রচ্ছায়া লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি চালু করেন। যুক্তরাষ্ট্রে তাদের ‘জুমানা ইনভেস্টমেন্ট’ নামে আরও একটি কোম্পানি রয়েছে, যার মাধ্যমে তারা বিভিন্ন দেশের অফশোর অ্যাকাউন্টে অর্থপাচার করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পোরেশন আরও জানিয়েছে, তাদের এ কোম্পানিটি ডেসটিনি গ্রুপ নামে একটি চিটিং ফান্ড কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, মালয়েশিয়ার ব্যাংকে রাখা বিভিন্ন রুশ স্ল্যাশ তহবিল থেকে এই ৫ বিলিয়ন ডলার পাঠানোর ক্ষেত্রে রাশিয়া শেখ হাসিনাকে সহায়তা করেছিল। গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পোরেশন পোর্টালটি ২০১৮ সালে চালু হয় এবং এটি বিভিন্ন দেশের সামরিক ও প্রতিরক্ষাখাতের দুর্নীতি অনুসন্ধানে কাজ করে, বিশেষ করে চীন ও রাশিয়ার সামরিক শক্তির বিস্তার রোধে পশ্চিমা প্রভাব বজায় রাখার লক্ষ্যে।