রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার দারুননাজাত ইসলামিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসেন ইমন (১২) র্যাবের হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে আব্দুল্লা আবু সাইদ ভূঁইয়া নামে এক ব্যক্তি এই মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মামলাটি এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন।
মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের; সাবেক মন্ত্রীরা—আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, তাজুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, হাসান মাহমুদ, মোহাম্মদ এ আরাফাত; এছাড়াও সালমান এফ রহমান, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক হারুন অর রশিদ, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি খ মাহিদ উদ্দিন, সাবেক গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশিদ এবং সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশ হিসেবে ছাত্রসমাজ শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন শুরু করলে ইমন সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এতে অংশ নেয়। এরপর শেখ হাসিনা ১৪ জুলাই গণভবনে এক প্রেস কনফারেন্সে আন্দোলনকারী ছাত্রদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে উল্লেখ করেন। এর ফলে আন্দোলনকারীরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলন জোরদার করে।
১৫ জুলাই ওবায়দুল কাদের ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঘোষণা দেন, ‘আন্দোলনকারীদের মোকাবিলা করার জন্য ছাত্রলীগই যথেষ্ট।’ এই বক্তব্যের পরই শিক্ষার্থীদের ওপর সহিংস দমন চালানোর পরিকল্পনা হয়। এরপর আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, হাছান মাহমুদ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনসহ অন্যান্য আসামিরা ছাত্রদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেন।
এই নির্দেশ অনুযায়ী, ১৯ জুলাই মোহাম্মদপুর আল্লাহ করিম মসজিদে র্যাবের হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছোঁড়া হয়, যার একটি গুলি ইমনের মাথায় আঘাত করে। ঘটনাস্থলেই ইমনের মৃত্যু হয়।