কুষ্টিয়া জেলার কর্মী সম্মেলনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তার দল রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে যুব সমাজকে দক্ষ ও স্বনির্ভর করে গড়ে তোলার মাধ্যমে দেশকে পুরনো গৌরব ফিরিয়ে দেবে। ২০২৫ সালের ৪ জানুয়ারি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত এই কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় এলে আমরা এমন একটি জাতি গড়ে তুলবো, যারা আর কখনোই বিদেশে চাকরির জন্য যেতে বাধ্য হবে না। আমাদের লক্ষ্য হবে এমন একটি সমাজ নির্মাণ করা, যেখানে দেশের মানুষ বিশ্বব্যাপী নিজেদের দক্ষতার পরিচয় দিতে পারবে। যেমনটি ১৭৫৭ সালের আগে এদেশের গৌরব ছিল, যখন বিদেশিরা চাকরির জন্য এখানে আসতো।” তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এই পরিকল্পনার বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশ আবারো তার পুরনো গৌরব পুনরুদ্ধার করবে।
বক্তব্যে তিনি ইসলামি রাষ্ট্র পরিচালনার আদর্শ হিসেবে মদিনা সনদের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “মদিনা সনদ আধুনিক রাষ্ট্র পরিচালনার প্রথম সংবিধান, যা সমঅধিকারের ভিত্তিতে সব নাগরিকের অধিকার সংরক্ষণের নিশ্চয়তা দেয়। সনদের প্রথম থেকে পঞ্চম ধারায় সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কোনো নাগরিকের অধিকার ধর্মের ভিত্তিতে বিভক্ত করা যাবে না।”
তিনি আরও বলেন, “ইসলাম একটি শান্তিপূর্ণ ধর্ম এবং এখানে কারও ওপর জুলুম করার সুযোগ নেই। মদিনা সনদের আলোকে আমরা এমন একটি সমাজ গড়তে চাই যেখানে সকল ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ব্যবসা-বাণিজ্য ও নিজ নিজ ধর্মীয় কাজ পরিচালনা করতে পারবে।”
সম্মেলনে বক্তারা আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে যুবসমাজের মধ্যে হতাশা বৃদ্ধি পাচ্ছে। জামায়াত এই পরিস্থিতি পাল্টাতে চায়। যুব সমাজকে দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তরিত করতে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের বিশেষ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের আর্থিক ভিত্তি মজবুত করার প্রতিশ্রুতি দেন তারা।
ডা. শফিকুর রহমান তার বক্তব্যে তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমরা যদি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি, তবে দেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।”
এই কর্মী সম্মেলনে দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন এবং সবাই দেশ গঠনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।