২০২৪-২৬ মেয়াদের জন্য বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত এস এম মান্নান কচি সম্প্রতি ব্যক্তিগত কারণ ও অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে পদত্যাগ করেছেন। তার পদত্যাগের পর ডিজাইনটেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খন্দকার রফিকুল ইসলাম বিজিএমইএর নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। এই সিদ্ধান্ত বিজিএমইএর বোর্ডের একটি জরুরি সভায় গৃহীত হয়, যা রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়। একই সভায় টিম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লাহ হিল রাকিবকে জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি এবং উর্মি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফ আশরাফকে সহ-সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।
এস এম মান্নান কচি, যিনি ঢাকা উত্তর সিটি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন, এখন থেকে বিজিএমইএর বোর্ডে পরিচালক হিসেবে কাজ করবেন। তবে তার পদত্যাগ নিয়ে বিজিএমইএর নেতারা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তার পদত্যাগের পেছনে ব্যক্তিগত কারণ এবং অসুস্থতা প্রভাবক ছিল। উল্লেখ্য, গত নির্বাচনে খন্দকার রফিকুল ইসলাম বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন।
তবে, এস এম মান্নান কচির পদত্যাগের পেছনে অন্য কিছু কারণও উঠে আসছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে তার দল, আওয়ামী লীগ, এক গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হয়। রাজনৈতিক এই পরিবর্তনের পর থেকে এস এম মান্নান কচি আত্মগোপনে ছিলেন।
এর আগে, ২০শে আগস্ট, বিজিএমইএর গত নির্বাচনে পরাজিত প্যানেল বর্তমান বোর্ডের বিলুপ্তি এবং সংগঠনের জন্য একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি গঠনের আহ্বান জানায়। প্যানেলটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দেয়া এক চিঠিতে অভিযোগ করে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত বিজিএমইএ নির্বাচনে অনিয়ম হয়েছে এবং তৎকালীন হাসিনা সরকারের দ্বারা নির্বাচন ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল।
প্যানেলের নেতারা আরও দাবি করেন, এস এম মান্নান কচির তৎকালীন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল এবং জুলাই-আগস্ট মাসের আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় তিনি জড়িত ছিলেন। এরই মধ্যে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর কচির বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। তার এই পদত্যাগ নিয়ে বিজিএমইএ ও রাজনৈতিক মহলে জল্পনা-কল্পনার অন্ত নেই।