বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে তিন কর্মকর্তাসহ মোট ১০ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা হক এই নির্দেশ দেন।
তবে, পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীসহ সাতজন প্রশ্নফাঁসের দায় স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে প্রস্তুত। বাকি ছয়জন হলেন পিএসসির অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান ও সাজেদুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী এবং বর্তমানে মিরপুরের ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, ব্যবসায়ী ভাই সাখাওয়াত হোসেন ও সাইম হোসেন এবং লিটন সরকার।
বেলা ১টার দিকে ১৭ আসামিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক জুয়েল চাকমা ৭ জনের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার আবেদন করেন এবং তাঁদের বিভিন্ন বিচারকের খাসকামরায় পাঠানো হয়।
বাকি ১০ জনকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন জানান তদন্ত কর্মকর্তা। এই ১০ জন হলেন পিএসসির উপপরিচালক মো. আবু জাফর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক এস এম আলমগীর কবীর, সাবেক সেনাসদস্য নোমান সিদ্দিকী, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, ব্যবসায়ী মো. জাহিদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত মো. মামুনুর রশীদ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মেডিকেল টেকনিশিয়ান মো. নিয়ামুন হাসান ও আবেদ আলীর ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম।
গত রোববার রাতে বিসিএসের প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে পিএসসির বিরুদ্ধে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর সৈয়দ আবেদ আলীর ফেসবুক পোস্টগুলো ভাইরাল হয়। পরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সিআইডি ১৭ জনকে আটক করে এবং তাঁরা পুলিশের কাছে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে সিআইডি পুলিশের এসআই নিপ্পন চন্দ্র চন্দ বাদী হয়ে পল্টন মডেল থানায় বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে পিএসসি কর্তৃক আয়োজিত বাংলাদেশ রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলীর পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে তা প্রচার ও বিতরণ করেছেন। বিপুল অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাঁরা প্রশ্নপত্র ফাঁস করেন।
মামলায় মোট ৩১ জনকে আসামি করা হয়েছে এবং আরও ৫০-৬০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়েছে।
পিএসসির সাবেক সহকারী পরিচালক নিখিল চন্দ্র রায়, মো. শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া, দীপক বণিক, খোরশেদ আলম খোকন, কাজী মো. সুমন, এ কে এম গোলাম পারভেজ, মেহেদী হাসান খান, মোহাম্মদ গোলাম হামিদুর রহমান, মো. মিজানুর রহমান, আতিকুল ইসলাম, এ টি এম মোস্তফা, মাহফুজ কালু, আসলাম ও কৌশিক দেবনাথসহ ১৪ জন পলাতক রয়েছেন।
এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৪ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে। মামলার এজাহার উপস্থাপনের পর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী এই তারিখ ধার্য করেন।