সরকার পরিবর্তনের পরপরই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তনের দাবি উঠেছে। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে অবস্থিত বিসিবির প্রধান কার্যালয়ের সামনে প্রতিদিনই আন্দোলন ও মিছিল চলছে। আন্দোলনকারীরা মূলত বিসিবির অভ্যন্তরীণ সংস্কারের দাবি তুলছেন। তাদের দাবি হলো বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনসহ বেশ কয়েকজন পরিচালককে পদত্যাগ করতে হবে। এই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে নাজমুল হাসান পাপন সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন বলে বিসিবির একটি সূত্র জানিয়েছে।
বিসিবির অভ্যন্তরীণ সূত্র থেকে জানা যায়, বর্তমানে যে কয়জন পরিচালক বোর্ডে সক্রিয় আছেন, তাঁরা সম্প্রতি এক আলোচনা সভায় মিলিত হন। এই বৈঠকে বোর্ডের একজন পরিচালক নাজমুল হাসানের পদত্যাগের ইচ্ছার কথা সভায় উপস্থিত সকলকে জানান। সূত্র মতে, নাজমুল হাসান পাপন বিসিবিতে সংস্কারের সুযোগ করে দিতে স্বেচ্ছায় সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে আগ্রহী। তবে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, তাঁকে লিখিতভাবে বোর্ডকে তাঁর পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানাতে হবে। এরপর এটি পরিচালনা পর্ষদের সভায় অনুমোদিত হতে হবে।
নিয়ম অনুযায়ী, নাজমুল হাসান পাপনের পদত্যাগের পর ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে বোর্ডের পরিচালকদের মধ্যে থেকে দুজন সহ-সভাপতি নির্বাচিত হবেন। এদের মধ্যে থেকে যে কেউ বোর্ডের পরবর্তী সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হতে পারেন। তবে, যদি এর বাইরে গিয়ে সরকারি হস্তক্ষেপে বোর্ডে পরিবর্তন আসে, তাহলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা (আইসিসি) থেকে কঠোর পদক্ষেপের আশঙ্কা রয়েছে। বিসিবির পরিচালকরা ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই সংকটময় পরিস্থিতিতে বোর্ডের কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কাজ করছেন।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর, গত ৫ আগস্ট থেকে বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন আত্মগোপনে আছেন। জানা গেছে, বর্তমানে তিনি তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে লন্ডনে অবস্থান করছেন। বোর্ডের সভাপতি ছাড়াও বিসিবির আরও ১৩ জন পরিচালক আত্মগোপনে রয়েছেন। তাঁদের অনুপস্থিতিতে বোর্ডের কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। নারীদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে বোর্ডের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য বেশ কয়েকবার বৈঠক করেও কোন কার্যকর সমাধানে পৌঁছাতে পারছেন না দেশে থাকা বাকি পরিচালকরা।
এই অচলাবস্থার কারণে ক্রিকেটের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু রাখতে এবং বোর্ডে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে নাজমুল হাসান পাপন সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দেশের ক্রিকেটের স্বার্থে এবং বোর্ডের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য তিনি নিজেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, এই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত এবং এর পরবর্তী পদক্ষেপগুলো ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং বিসিবির পরিচালকদের সমন্বয়ে নেওয়া হবে বলে বোর্ডের সূত্র জানিয়েছে।