সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর গোয়েন্দাদের কাছে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন দফায় জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি তার অর্থ লোপাটের কাহিনী এবং অন্যান্য আর্থিক অনিয়মের তথ্য দিয়েছেন। এসব তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিভিন্ন ব্যাংকের নথি ঘেঁটে আরও নিশ্চিত করা যাচ্ছে।
তদন্তে জানা গেছে, সালমান এফ রহমান জনতা ব্যাংকের একটি শাখা থেকে প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন, যা ওই শাখার মোট ঋণের ৬৫ শতাংশ। এ ঋণের বেশিরভাগই ছিল বেনামি, যা পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংক তার নামে সংযুক্ত করে।
একজন অভিজ্ঞ ব্যাংকার জানান, বেনামি ঋণ পদ্ধতি সালমান এফ রহমানের মাধ্যমে শুরু হয়, যা ধীরে ধীরে দেশের পুরো ব্যাংকিং খাতে ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে প্রায় সব অসাধু ব্যবসায়ী বেনামি ঋণের সুবিধা নিচ্ছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও জনতা ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বেক্সিমকো গ্রুপ এবং তার সাথে সংশ্লিষ্ট ৩২টি প্রতিষ্ঠান জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিস থেকে প্রায় ২৬,৯৫৪ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এর বেশিরভাগ ঋণই নেওয়া হয় ২০২১, ২২ ও ২৩ সালে। এসব ঋণের বেশিরভাগই বেনামি প্রতিষ্ঠানের নামে ছিল, যা পরে বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে দেখানো হয়।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেছেন, সালমান এফ রহমান বর্তমানে মানুষ খুনের অভিযোগে জেলে আছেন, এবং তার বিরুদ্ধে আর্থিক অপরাধের অভিযোগেও মামলা হতে পারে। এ ধরনের অপরাধে ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ও বাংলাদেশ ব্যাংকও জড়িত থাকতে পারে। তাই নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সবার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত এবং একইসঙ্গে বেনামি ঋণগুলো পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করতে হবে।