সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের বিষয়ে ছাত্রসমাজ সর্বোচ্চ আদালত থেকে ন্যায়বিচার পাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন।
বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই আহ্বান জানান। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে ভাষণটি সরাসরি সম্প্রচারিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধানের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও রাস্তায় আন্দোলন করে দুষ্কৃতকারীদের সংঘাতের সুযোগ করে দেবেন না। সর্বোচ্চ আদালতের রায় আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে আমি সকলকে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি। আমার বিশ্বাস, আমাদের ছাত্রসমাজ উচ্চ আদালত থেকে ন্যায়বিচার পাবে, তাদের হতাশ হতে হবে না।’
সরকার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, আপিল আদালতে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। আদালতে শিক্ষার্থীদের বক্তব্য শোনার সুযোগ আছে এবং আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের সুযোগ রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, তিনি আন্দোলনরত কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। সন্ত্রাসীরা যেকোনো সময়ে সংঘাতের পরিবেশ তৈরি করে তাদের ক্ষতিসাধন করতে পারে। শিক্ষার্থীদের মা-বাবা, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের প্রতি তিনি অনুরোধ করেন, তারা যেন সন্তানদের নিরাপত্তার বিষয়ে সজাগ থাকেন। একই সঙ্গে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষভাবে নজর রাখার আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ২০১৮ সালে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিল করা হয়েছিল। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে কোটা বহাল রাখার আবেদনে উচ্চ আদালত ২০১৮ সালে জারি করা সরকারের পরিপত্র বাতিল করেন। সরকারের পক্ষ থেকে পরিপত্র বহাল রাখার জন্য সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করা হয় এবং আদালত শুনানির দিন ধার্য করেন। এরপর আবার ছাত্ররা কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। এই আন্দোলনের শুরু থেকেই সরকার যথেষ্ট ধৈর্য ও সহনশীলতা প্রদর্শন করেছে। আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ সহযোগিতা করেছে। রাষ্ট্রপতির কাছে আন্দোলনকারীরা স্মারকলিপি প্রদান করতে চাইলে তাদের সেই সুযোগও দেওয়া হয় এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়।