বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না ভারতে পালানোর চেষ্টা করার সময় মৃত্যুবরণ করেছেন। শুক্রবার মধ্যরাতে মেঘালয়ের শিলং পাহাড়ে ওঠার সময় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু ঘটে। পান্না কিছুদিন ধরে আত্মগোপনে ছিলেন এবং ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভারতের মেঘালয় দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কলকাতায় অবস্থান করা পান্নার এক ঘনিষ্ঠজন, যিনি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। তিনি জানিয়েছেন, পান্না সিলেটের তামাবিল সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশের পর শিলংয়ের একটি পাহাড়ে উঠেছিলেন। ওপারে যাওয়ার চেষ্টার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং তাতেই তার মৃত্যু ঘটে। তবে, পান্নার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভিন্ন ভিন্ন তথ্যও পাওয়া গেছে। কেউ কেউ দাবি করেছেন, পাহাড়ে ওঠার সময় পা পিছলে পড়ে তিনি মারা গেছেন।
পান্নার বড় ভাইয়ের শ্যালক জসিম উদ্দিন খান, যিনি পান্নার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন, জানিয়েছেন যে তিনদিন আগে পান্নার সাথে তার ফোনে কথা হয়েছিল। তার মতে, পান্না সীমান্ত পার হয়ে ভারতের মেঘালয়ে প্রবেশ করেন এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়। জসিম উদ্দিন আরও জানান, পান্নার মরদেহ মেঘালয়ের একটি থানায় রয়েছে বলে তারা জানতে পেরেছেন। একই তথ্য জানিয়েছেন পান্নার ভাগনে ও কাউখালীর চিড়াপাড় সাতুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লায়েকুজ্জমান মিন্টু। তবে, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি, এবং পুলিশের তরফে এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে, একটি ভিন্ন সূত্রে জানা গেছে যে, পান্নার সঙ্গে পালানোর সময় সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিনও উপস্থিত ছিলেন। তবে বিষয়টি নিশ্চিত করা যায়নি, কারণ আমিনের মোবাইল ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। আরও একটি সূত্রে জানা গেছে যে, ঝালকাঠি ছাত্রলীগের একজন নেতাও পান্নার সঙ্গে ছিলেন।
ইসহাক আলী খান পান্না মৃত্যুর আগপর্যন্ত পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি ১৯৯৪ সালের ছাত্রলীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন আওয়ামী লীগ উপ-কমিটিতে কাজ করেন। তবে তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বাইরে ছিলেন। পেশাগত জীবনে পান্না বীমা কোম্পানি ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
পান্নার মৃত্যু নিয়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। মৃত্যুর পর তার মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়েও কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ নুরুল হুদা জানিয়েছেন, কোনো বাংলাদেশি নাগরিক বৈধ বা অবৈধভাবে ভারতে গেলে, মরদেহ ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই। শুধু বিষয়টি সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাসকে জানাতে হবে। এরপর দূতাবাসের তহবিল থেকে বা স্বজনের খরচে মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে।
এস এম মান্নান কচি, যিনি ২০২৪-২৬ মেয়াদের জন্য বিজিএমইএ’র সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন, সম্প্রতি পদত্যাগ করেছেন। খন্দকার রফিকুল ইসলাম তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন এবং তিনি এখন দায়িত্ব পালন করছেন। বিজিএমইএ বোর্ড শনিবার এক জরুরি সভায় রফিকুলকে সভাপতি নির্বাচিত করে। এছাড়াও, টিম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লাহ হিল রাকিবকে জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি এবং উর্মি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফ আশরাফকে সহ-সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে।
মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া এবং এই ঘটনার প্রভাব নিয়ে আরও অনেক প্রশ্ন ও উদ্বেগ রয়ে গেছে, যেগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্কার হবে।