সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বেশ কিছু চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জাপান, জার্মানি, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের দেশে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মালদ্বীপে প্রেষণে নিযুক্ত হাইকমিশনারকেও দেশে ফিরতে বলা হয়েছে। এই নির্দেশের ফলে এসব দেশে কর্মরত সাতজন রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারকে তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে।
গতকাল বুধবার (১৪ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ডি এম সালাহ উদ্দিন মাহমুদ স্বাক্ষরিত পৃথক প্রজ্ঞাপনে এই নির্দেশনা জারি করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয় যে, যেসব রাষ্ট্রদূত চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে কর্মরত আছেন, তাদের অবিলম্বে ঢাকায় ফেরার জন্য বলা হয়েছে।
পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘সম্প্রতি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই আলোকে চুক্তিতে থাকা ছয় রাষ্ট্রদূতকে দেশে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল হচ্ছে বলে ধরে নেওয়া যায়।’
দেশে ফেরার নির্দেশ পাওয়া রাষ্ট্রদূতদের মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত মোহাম্মদ ইমরান, রাশিয়ায় নিযুক্ত কামরুল আহসান, সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত মো. আবু জাফর, জাপানে নিযুক্ত শাহাবুদ্দিন আহমদ, জার্মানিতে নিযুক্ত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, এবং সৌদি আরবে নিযুক্ত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। এদের মধ্যে মোহাম্মদ ইমরান, কামরুল আহসান, এবং মো. আবু জাফর পেশাদার কূটনীতিক। তারা স্বাভাবিক চাকরির মেয়াদ শেষ করে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে দায়িত্ব পালন করছিলেন। অন্যদিকে, জাপান ও জার্মানিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতরা সরকারের সাবেক সচিব ছিলেন এবং সৌদি আরবে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক ছিলেন।
মালদ্বীপে হাইকমিশনার হিসেবে প্রেষণে নিযুক্ত ছিলেন নৌবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রিয়াল অ্যাডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ। তাকেও দেশে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, পৃথক আদেশে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসে নিযুক্ত আরিফা রহমান রুমা, কানাডায় হাইকমিশনে নিযুক্ত অপর্ণা রানী পাল, এবং মিথিলা ফারজানাকে দেশে ফিরতে বলা হয়েছে। এই তিনজনের মধ্যে প্রথমজন প্রেষণে দায়িত্ব পালন করছিলেন এবং শেষের দুইজন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১১ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আটটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যার মধ্যে অন্যতম হলো চুক্তিভিত্তিক সব নিয়োগ বাতিল করা। এই সিদ্ধান্তের ফলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি হচ্ছে এবং বিতর্কিত নিয়োগগুলো অনতিবিলম্বে বাতিল করা হবে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগও বাতিল করার পরিকল্পনা রয়েছে।