ওমিক্রন ঠেকাতে সরকারের ১১ দফা বিধিনিষেধ !
করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়ান্ট অমিক্রন ঠেকাতে ১১ দফা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার । গতকাল সোমবার (১০ জানুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে এ বিধিনিষেধ কার্যকর হবে।
দেশে অমিক্রনের প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলেছে ।গতকালও মোট ২ হাজার ২৩১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আর মারা গেছেন তিনজন। এদিন পর্যন্ত দেশে মোট ৩০ জনের ওমিক্রন শনাক্ত করা হয়। তাই এই ভয়াবহতা ঠেকাতে সরকার এখনি বিধিনিষেধের উপর জোরদার করেছেন ।এখন থেকে গণপরিবহনে যাত্রী বহন করতে হবে ধারণক্ষমতার অর্ধেক। মাস্ক ছাড়া ঘরের বাইরে যাওয়া নিষেধ করা হয়েছে এই বিধি-নিষেধে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে এখনই কোন চিন্তা করছেনা সরকার ।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, করোনা ভাইরাসজনিত রোগ (কোভিড-১৯)-এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব ও দেশে এই রোগের সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সার্বিক কার্যাবলি/চলাচলে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হলো।
১. দোকান, শপিংমল ও বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা এবং হোটেল-রেঁস্তোরাসহ সব জনসমাগমস্থলে বাধ্যতামূলকভাবে সবাইকে মাস্ক পরিধান করতে হবে। অন্যথায় তাকে আইনানুগ শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।
২. অফিস-আদালতসহ ঘরের বাইরে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে ব্যত্যয় রোধে সারাদেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে।
৩. রেঁস্তোরায় বসে খাবার গ্রহণ এবং আবাসিক হোটেলে থাকার জন্য অবশ্যই করোনা টিকা সনদ প্রদর্শন করতে।
৪. ১২ বছরের ঊর্ধ্বের সব ছাত্র-ছাত্রীকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্ধারিত তারিখের পরে টিকা সনদ ছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।
৫. স্থলবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দরসমূহে স্ক্রিনিংয়ের সংখ্যা বাড়াতে হবে। পোর্টসমূহে ক্রু-দের জাহাজের বাইরে আসার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করতে হবে। স্থলবন্দরগুলোতেও আগত ট্রাকের সঙ্গে শুধুমাত্র ড্রাইভার থাকতে পারবে। কোনো সহকারী আসতে পারবে না। বিদেশগামীদের সঙ্গে আসা দর্শনার্থীদের বিমানবন্দরে প্রবেশ বন্ধ করতে হবে।
৬. ট্রেন, বাস এবং লঞ্চে সক্ষমতার অর্ধেক সংখ্যক যাত্রী নেওয়া যাবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কার্যকারিতার তারিখসহ সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করবে। সর্বপ্রকার যানের চালক সহকারীদের আবশ্যিকভাবে কোভিড-১৯ টিকা সনদধারী হতে হবে।
৭. বিদেশ থেকে আগত যাত্রীসহ সবাইকে বাধ্যতামূলক কোডিড-১৯ টিকা সনদ প্রদর্শন ও র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করতে হবে।
৮. স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন এবং মাস্ক পরিধানের বিষয়ে সব মসজিদে জুমার নামাজের খুতবায় ইমামরা সংশ্লিষ্টদের সচেতন করবেন। জেলা প্রশাসক উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা এ বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
৯. সর্বসাধারণের করোনার টিকা এবং বুস্টার ডোজ গ্রহণ ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় প্রচার এবং উদ্যোগ গ্রহণ করবে। এক্ষেত্রে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সহায়তা গ্রহণ করবে।
১০. কোভিড আক্রান্তের হার ক্রমবর্ধমান হওয়ায় উন্মুক্ত স্থানে সর্বপ্রকার সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং সমাবেশসমূহ পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হবে।
১১. কোনো এলাকার ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে সেক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিতে পারবে।
সব সিনিয়র সচিব/সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার এবং বিভাগীয় কমিশনারদের উল্লিখিত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া জেলা প্রশাসক ও ইউ এন ও দের এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ও বিধিনিষেধ কার্যকরে সারাদেশে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হবে ।
স্টাফ রিপোর্টার
আতিকুল ইসলাম আতিক