ব্রিটিশ রাজা চার্লসঃ ইসলাম সম্পর্কে নতুন রাজার যেমন দৃষ্টিভঙ্গি!
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর ব্রিটিশ রাজা হয়েছেন তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র চার্লস ফিলিপ আর্থার জর্জ।সিংহাসনে বসার পর তাঁর নাম হয়েছে রাজা তৃতীয় চার্লস। রাজা হওয়ার পর থেকে তৃতীয় চার্লসের বিষয়ে বিশ্বজুড়ে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে।
ইসলাম ধর্মের প্রতি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। ৭৩ বছর বয়সী চার্লস কয়েক দশক ধরেই আলোচনায় রয়েছে। বিশেষ করে ডায়নার সঙ্গে বিচ্ছেদের পরই বেশি আলোচিত হন তিনি। তাছাড়া নতুন এই ব্রিটিশ রাজা জলবায়ু পরিবর্তন, রাজনীতি এবং ধর্মসহ বেশ কয়েকটি সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বিষয়ে নিজের মতামতের জন্যও সাধারণ মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন। ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে চার্লস বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে নিজের চিন্তাভাবনা প্রকাশ করেছেন। ওইসব অনুষ্ঠানে খোলাখুলি ভাবে মুসলিম ধর্মের প্রশংসা করেছেন। ” লেখক রবার্ট জবসন তার ” চার্লস অ্যাট সেভেন্টিঃথটস,হোপস অ্যান্ড ড্রিমস” বইতে উল্লেখ করেছেন,ব্রিটেনের রাজা ইসলামের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কোরআন অধ্যয়ন করেন এবং মুসলিম নেতাদের কাছে লেখা চিঠিতে আরবি ভাষায় স্বাক্ষর করেন”।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ(সা.) কে ব্যঙ্গ করে ২০০৫ সালে একটি ড্যানিশ কার্টুন প্রকাশিত হয়েছিলো। ২০০৬ সালে মিশরের কায়রোতে অবস্থিত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে সফরের সময় সেই ঘটনার সমালোচনা করেছিলেন রাজা তৃতীয় চার্লস। এছাড়া চলতি বছরের এপ্রিল মাসে রাজা তৃতীয় চার্লস বলেছিলেন, সবাই “রমজানের চেতনা থেকে” শিখতে পারে।গত এপ্রিলে মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাসের শুরুতে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, শুধু উদারতাই নয়,সংযম,কৃতজ্ঞতা, এবং প্রার্থনায় একতাবদ্ধতা বিশ্বজুড়ে অনেককে মহান স্বস্তি দেবে। একটি সভ্য সমাজের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি তাঁর সংখ্যালঘু এবং অপরিচিতদের সম্মানের চোখে দেখে। অন্যের চোখে যা পবিত্র এবং মূল্যবান তা সম্মান করতে না পারলে সেটি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
১৯৯৩ সালে অক্সফোর্ড সেন্টার ফর ইসলামিক- স্টাডিজে দেয়া আলোচিত এক বক্তৃতা কালে রাজা তৃতীয় চার্লস বলেছিলেন, ইসলামিক বিশ্বের কাছে আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি এবং সভ্যতার ঋণ সম্পর্কেও ( আমাদের) অনেক অজ্ঞতা রয়েছে। এটি একটি ব্যর্থতা বলেই আমি মনে করি। ইতিহাস থেকে যা আমরা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছি।
রাজা চার্লস দীর্ঘদিন ধরেই মুসলিম বিশ্বকে পশ্চিমাদের কাছে নেয়ার চেষ্টা করেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, উভয় পক্ষের মধ্যে বেশ কিছু ভুল বুঝাবুঝি রয়েছে। পশ্চিমা বিশ্ব ইসলামিক বিশ্বের কাছে অনেক দিক থেকে ঋণী তাও উল্লেখ করেন চার্লস। ১৯৯৩ সালে তিনি বলেছিলেন, পশ্চিমা বিশ্ব শুধু ইসলাম সম্পর্কে ভুল বুঝে তা নয়,তারা সভ্যতা ও সংস্কৃতিতে ইসলামিক বিশ্বের অবদানের কথাও ভুলে যায়।
রাজা চার্লস বলেন, ইসলাম ধর্মকে শুধু “সন্ত্রাসবাদ” দিয়ে ব্যাখ্যা করা ঠিক নয়।
তথ্যসূত্রঃ আল জাজিরা।
Post Views: ১২৫