প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, আন্দোলন করে রায় পরিবর্তন করা যায় না। রায় পরিবর্তন কেবল আদালতেই সম্ভব।
বুধবার মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল চেয়ে করা আবেদনের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, টকশোতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উসকানি দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা হয়তো বুঝে বা না বুঝে আন্দোলন করছেন, তাদের মনে ক্ষোভ থাকতে পারে। তবে যারা টকশোতে কথা বলছেন তাদের শুনলে মনে হয়, তাদের চেয়ে জ্ঞানীগুণী আর কেউ নেই। আমরা যারা বিচারকের আসনে আছি, তারা কিছুই জানি না। মনে হয়, তারা সব জানেন, আমরা কিছু জানি না।
প্রধান বিচারপতি বলেন, শিক্ষার্থীদের যেভাবে আন্দোলন করছে তা সমর্থনযোগ্য নয়। হাইকোর্ট একটি রায় দিয়েছেন, সেটি সঠিক হয়েছে কিনা তা দেখার জন্য আপিল বিভাগ রয়েছে। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বাতিল, সংশোধন বা বহাল রাখতে পারেন। শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্য আদালতে তুলে ধরতে পারেন, সেটাই যথাযথ ফোরাম।
তিনি বলেন, আগেও বলেছি, আন্দোলন করে রায় পরিবর্তন হয় না, রায় পরিবর্তন আদালতেই সম্ভব।
এ সময় প্রধান বিচারপতি যে দুই শিক্ষার্থী আপিল বিভাগে আবেদন নিয়ে এসেছেন এবং তাদের আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হককে ধন্যবাদ জানান। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কোনো বক্তব্য থাকলে তা লিখিত আকারে আদালতে জমা দিতে বলেছেন।
শুনানির পর আপিল বিভাগ সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা জারি করেন। এ সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করতে বলেন আদালত।
এই আদেশের ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র বহাল রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী।
এর আগে, ৪ জুলাই আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় আপাতত বহাল রাখেন।
২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে কোটা পদ্ধতি তুলে দিয়ে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এরপর থেকে বিসিএসসহ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে শতভাগ মেধাভিত্তিক নিয়োগ চালু রয়েছে।